আখাউড়ায় ওজন মাপার যন্ত্রে ত্রুটি, আমদানি বন্ধ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরের পণ্য পরিমাপের ওজন স্কেলের সমস্যার কারণে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। স্কেলে সঠিকভাবে ওজন পরিমাপ হচ্ছে না। বিষয়টি সমাধানের জন্য বন্দরের সহকারী পরিচালককে মৌখিক এবং লিখিতভাবে অনুরোধ করার পরও ওজন স্কেলটি মেরামত না করায় সোমবার দুপুর থেকে ভারত থেকে আমদানি পণ্য স্থলবন্দরে আসা বন্ধ করে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা। দ্রুত বিষয়টির সমাধান করা না হলে এ বন্দর দিয়ে আমদানিতে আগ্রহ হারাবে ব্যবসায়ীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৩ মাস ধরে আখাউড়া স্থলবন্দরের পণ্যের ওজন মাপার স্কেলে সঠিকভাবে ওজন মাপা যাচ্ছে না। ওজন কখনো কমছে, কখনো আবার বাড়ছে। এতে করে আমদানিকৃত পণ্য রপ্তানিকারকদের কাছ থেকে সঠিকভাবে বুঝে নিতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। এজন্য ব্যবসার ক্ষতির মুখে পড়ছেন তারা। বিষয়টি বন্দর কর্তৃপক্ষের নিকট বারবার জানানো হলেও কোনো সঠিক সমাধান পাচ্ছেন না।

আখাউড়া স্থলবন্দরের সিএন্ডএফ এজেন্ট মের্সাস আদনান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী আকতার হোসেন জানান, গত ৮ আগস্ট থেকে আমাদের প্রতিষ্ঠানের আমদানি কার্যক্রম শুরু হয়। শুরু থেকেই বন্দরে থাকা ওজন স্কেলে আমদানিকৃত পণ্যের ওজন কখনও বাড়ছে, কখনও আবার কমছে। এজন্য আমদানিকারক থেকে সঠিকভাবে পণ্য বুঝে নিতে পারছি না। বিষয়টির সমাধানের জন্য মৌখিকভাবে একাধিকবার বন্দরের সহকারী পরিচালককে জানিয়েছে। তিনি আমলে নিচ্ছেন না।

‘পরে গত ১৭ অক্টোবর বন্দরের সহকারী পরিচালক বরাবর ওজন স্কেলটি সংস্কার করার জন্য লিখিতভাবে আবেদন করি। কিন্তু এখন পর্যন্ত স্কেলটি ঠিক করা হয়নি। এতে আমাদের আমদানীকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আগরতলা বন্দরে পণ্য বোঝাই বহু গাড়ি বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় আটকা পড়ে আছে। ইতিমধ্যে আমদানী বন্ধ হয়ে গেছে।’ বলেন আকতার হোসেন।

আকতার অভিযোগ করেন, বন্দর পরিচালকের খাম খেয়ালির কারণে আমাদের ব্যবসা হুমকির মুখে পড়েছে।

আখাউড়া স্থলবন্দরের সিএন্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ফোরকান খলিফা বলেন, আখাউড়া স্থলবন্দর একটি শতভাগ রপ্তানি মুখর বন্দর। গত তিন মাস ধরে এই বন্দরে আমদানি বেড়েছে। কিন্তু বন্দরের ওজন স্কেলটি সংস্কারের অভাবে আমদানিকৃত পণ্যের প্রতিটি ট্রাকে ওজন প্রকৃত ওজন থেকে ১০০ থেকে ২০০ কেজি বেড়ে যাচ্ছে। এতে করে প্রতি শিপমেন্টে এলসির মোট ওজন থেকে থেকে প্রায় তিন-চার টন করে ওজন বেড়ে যাচ্ছে। এতে আমদানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

ফোরকান খলিফা বলেন, স্কেলের সমস্যার কারণে মালামাল বেশি চলে যাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে আমদানকারীকরা এ বন্দর দিয়ে ব্যবসা করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করবে না। তারা অন্য দিকে থেকে চলে যাবে। বিষয়টি সমাধানের জন্য বন্দরের সহকারি পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমানকে মৌখিকভাবে এবং লিখিত ভাবে অনুরোধ করেছি। কিন্তু তিনি কোন ব্যবস্থান নিচ্ছেন না। তিনি দ্রুত ওজন স্কেলটি সংস্কার করার দাবি জানান।

আখাউড়া স্থলবন্দর কর্মকর্তা ট্রাফিক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের স্কেলে ওজনে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। প্রতি ট্রাকে ওজন কোন গাড়িতে ৫০ কেজি ১০০ কেজি কম বেশি হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন আমাদের কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। গত বৃহস্পতিবার একজন টেকনিশিয়ান এসে স্কেলটি এডজাস্টমেন্ট করে গিয়েছিল। কিন্তু আবারও একই সমস্যা দেখা দিয়েছে। ওজনে একটু তারতম্য হচ্ছে। সোমবার এটা আমাদের হেড অফিসকে জানিয়েছি। হেড অফিস এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে। আমরা যেহেতু শতভাগ ওজন নিশ্চিত করতে পারছি না। ব্যবসায়ীরাও অনুরোধ করেছেন স্কেলটি মেরামত না হওয়া পর্যন্ত আমদানি কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য।