নতুন ঋণের আওতায় আসছে আরো ১ লাখ ১৮ হাজার ক্ষুদ্র কৃষক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

কৃষকদের উৎপাদন ও আয়বর্ধক কার্যক্রমে আর্থিক সক্ষমতা বাড়াতে নতুন করে দেশের ১ লাখ ১৮ হাজার ক্ষুদ্র কৃষককে ঋণ দেবে সরকার। এ ঋণের সুদহার হবে ১১ শতাংশ। তবে সুফলভোগীদের তহবিলে ১ শতাংশ যুক্ত হবে। প্রকল্পের আওতায় কিছু বৃহৎ ঋণও দেওয়া হবে। ফলে প্রকল্প অনুমোদনের পর ঋণের আওতায় আসবে মোট ১ লাখ ৩৬ হাজার কৃষক।

বুধবার (১ জুন) পরিকল্পনা কমিশনের একনেক সভায় প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হবে।

সূত্র জানায়, আড়াই থেকে ৫ শতাংশ জমি থাকলেই কোনো ব্যক্তিকে ক্ষুদ্র কৃষক হিসেবে বিবেচনা করে এ ক্ষুদ্রঋণ দেওয়া হবে। ঋণ দেওয়ার দুই মাস পর থেকে নেওয়া হবে সুদ। প্রথম ধাপে ক্ষুদ্রঋণের ভলিউম হবে ৩০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। প্রকল্পের আওতায় কিছু কৃষক বা বর্গা নেওয়া খামারিদের দেওয়া হবে বড় ঋণ। এর ভলিউম দেড় লাখ থেকে চার লাখ টাকা পর্যন্ত হবে।

‘রূপকল্প ২০৪১: দারিদ্র্য বিমোচনে ক্ষুদ্র সঞ্চয় যোজন’ প্রকল্পের আওতায় এ উদ্যোগ নিয়েছে ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন (এসএফডিএফ)। প্রকল্পের মোট প্রস্তাবিত ব্যয় ১৪৯ কোটি টাকা।

কৃষকের বাড়ি বাড়ি ঘুরে এ ঋণ বিতরণ করা হবে। এ ঋণের ১১ শতাংশ সুদহারকে সুদ না বলে ‘সার্ভিস চার্জ’ বলছে ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন। এ ঋণ হবে জামানতবিহীন। ১ শতাংশ আবার কৃষক ফেরত পাবেন। ১ শতাংশ যাবে তহবিলে। দেশের দুইশো উপজেলার কৃষকের মাঝে এ ঋণের টাকা বিতরণ করা হবে।

ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের উপ-মহাব্যবস্থাপক (আইসিটি, পরিকল্পনা ও ডকুমেন্ট) মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রকল্পটি বুধবার একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে। প্রকল্প অনুমোদনের পর এ ঋণের আওতায় আসবে মোট ১ লাখ ৩৬ হাজার ক্ষুদ্র কৃষক। ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন অলাভজনক সংস্থা। আমরা ১১ শতাংশ সার্ভিস চার্জ নিই। এটা সুদ নয়, সার্ভিস চার্জ। ব্যাংক ঋণের সঙ্গে এর তুলনা করলে হবে না। আমরা কৃষকের ঘরে ঘরে গিয়ে ঋণ দিয়ে আসি। এ কাজে এনজিওগুলো ২৮ থেকে ৩০ শতাংশ সুদ নেয়। আমরা নিচ্ছি ১১ শতাংশ সার্ভিস চার্জ। ১ শতাংশ সার্ভিস চার্জ আবার কৃষকদের ফেরত দেওয়া হবে। আমরা প্রফিট করি না, আয় থেকে ব্যয় হবে।

প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ১৪৯ কোটি টাকা উল্লেখ করা হলেও লজিক্যাল ফ্রেমওয়ার্কসহ একাধিক অনুচ্ছেদে ঋণ বিতরণের পরিমাণ ২৭৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রকল্পে ক্ষুদ্রঋণ ৮৬ কোটি টাকা, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ঋণ ২০ কোটি ৬০ লাখ এবং বিশেষ উৎসাহ তহবিল বাবদ ১০ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে। এ অর্থ প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয়ের ৭৮ শতাংশ প্রায়। প্রকল্পটি অনুমোদনের পর ৩০ জুন ২০২৪ সাল নাদাগ বাস্তবায়িত হবে।

বর্তমানে ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম দেশের ৩৬টি জেলার ১৭৩টি উপজেলায় বাস্তবায়ন হচ্ছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পটি আরও ২৭টি নতুন উপজেলায় সম্প্রসারণসহ ২০০টি উপজেলায় বাস্তবায়নের প্রস্তাব করা হয়েছে।