নিজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব চেয়েছে এনবিআর

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতাধীন কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর বিভাগের সব কর্মকর্তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের হিসাব চাওয়া হয়েছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অংশ হিসাবে গত ২৫ জানুয়ারি এনবিআরের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাছে নির্ধারিত ফরমে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের হিসাব জরুরি ভিত্তিতে স্ব স্ব বিভাগের বোর্ড প্রশাসনের দফতরে জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

সোমবার (১ জানুয়ারি) এনবিআরের জনসংযোগ দফতর সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বোর্ড প্রশাসন থেকে প্রতিটি দফতরে দেওয়া এ সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর আওতাভুক্ত মন্ত্রণালয়/দপ্তর/অধীনস্থ সংস্থায় কর্মরত সব সরকারি কর্মকর্তার সম্পদ বিবরণী দাখিল, উক্ত সম্পদ বিবরণীর ডেটাবেজ তৈরি এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে স্থাবর সম্পত্তি অর্জন ও বিক্রয়ের অনুমতি গ্রহণের বিষয়ে ‘সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯’-এর ১১, ১২ এবং ১৩ বিধি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে প্রতিপালনের মাধ্যমে জরুরি ভিত্তিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রশাসন বরাবর প্রেরণ করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে এনবিআরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, এনবিআরের করযোগ্য সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এমনিতেই প্রতি বছর আয়কর বিবরণী জমা দেন। সেখানে সম্পদের সব তথ্য থাকে। অফিস প্রধান চাইলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সম্পদের হিসাব দিতে বাধ্য। এনবিআর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আদেশ বাস্তবায়ন করছে মাত্র। এক্ষেত্রে করযোগ্য আয় যারা করেন বা করেন না তাদের সবাইকেই সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে হবে। যদিও করোনা মহামারিসহ বিভিন্ন জটিলতায় আদেশ বাস্তবায়নে দেরি হয়েছে।

বর্তমানে এনবিআর ও এনবিআরের আওতাধীন কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর বিভাগে অনুমোদিত জনবলের পদসংখ্যা ২২ হাজার ১২৩। এর মধ্যে কর্মরত জনবলের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার।

যদিও সরকারি চাকরিজীবীদের প্রতি পাঁচ বছর পরপর ডিসেম্বরে বাধ্যতামূলকভাবে সম্পদের হিসাব দেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু বিধান থাকলেও তা বাস্তবায়নের দৃষ্টান্ত দেখা যায় না বললেই চলে।

বিষয়টিকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে ২০২১ সালের ২৪ জুন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব বিবরণী নিতে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবদের চিঠি দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (শৃঙ্খলা-৪) নাফিসা আরেফীন সই করা ওই চিঠিতে বলা হয়েছিল, সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯-এর বিধি ১১, ১২ ও ১৩ তে সরকারি কর্মচারীদের স্থাবর সম্পত্তি অর্জন, বিক্রয় ও সম্পদবিবরণী দাখিলের বিষয়ে নির্দেশনা আছে। সুশাসন নিশ্চিতে প্রধানমন্ত্রী উল্লিখিত বিধিসগুলো কার্যকরভাবে কর্মকর্তাদের অনুসরণের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়কে জোর নির্দেশনা দেন। ওই চিঠিতে সব মন্ত্রণালয়/দপ্তর/অধীনস্থ সংস্থায় কর্মরত সব সরকারি কর্মকর্তার সম্পদ বিবরণী দাখিল, উক্ত সম্পদ বিবরণীর ডেটাবেজ তৈরির নির্দেশনা দেওয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেককে নিজ নিজ মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তরের কাছে প্রতি পাঁচ বছর পর ডিসেম্বরে সম্পদের হিসাব জমা দিতে হবে। কেউ এই নির্দেশ অমান্য করলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে।