পতনের বাজারে বেড়েছে বিনিয়োগ ‘ঝুঁকি’

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: দরপতন দিয়ে গেল সপ্তাহ পার করেছে দেশের শেয়ারবাজার। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারবাজারে লেনদেন অংশ নেওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার থেকে বেশি। এতে কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেন ও বাজার মূলধন। এর মাধ্যমে টানা দুই সপ্তাহ পতনের মধ্যে থাকলো শেয়ারবাজার।

এমন টানা দরপতনের শেয়ারবাজারে বেড়েছে বিনিয়োগ ঝুঁকি। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ ঝুঁকি নির্ণয় করা হয় মূল্য আয় অনুপাত (পিই) দিয়ে। সাধারণত ১০-১৫ পিইকে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঝুঁকিমুক্ত ধরা হয়। আর কোনো কোম্পানির পিই ১০-এর নিচে চলে গেলে, ওই কোম্পানির শেয়ার দাম অবমূল্যায়িত বা বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ ধরা হয়।

সপ্তাহজুড়ে শেয়ারবাজারে দরপতন হলেও প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত সপ্তাহের ব্যবধানে দশমিক ২২ পয়েন্ট বেড়ে গেছে। গত সপ্তাহের লেনদেন শেষে ডিএসইর সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত দাঁড়ায় ১৭ দশমিক ৭১ পয়েন্ট। এক সপ্তাহ আগে এই মূল্য আয় অনুপাত ছিল ১৭ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট। অর্থাৎ পিই বাড়ার হার ১ দশমিক ২৬ শতাংশ।

এদিকে বিনিয়োগ ঝুঁকি বাড়লেও তিন খাতের পিই এখনো সার্বিক বাজার পিই’র নিচে রয়েছে। এই তিন খাতের মধ্যে রয়েছে- ব্যাংক, সাধারণ বিমা এবং টেলিযোগাযোগ। এরমধ্যে সব থেকে কম পিই রয়েছে ব্যাংক খাতের। বর্তমানে এ খাতের পিই রয়েছে ৮, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৭ দশমিক ৮০ পয়েন্ট।

১৫ দশমিক ৭০ পিই নিয়ে এর পরের স্থানে রয়েছে সাধারণ বিমা খাত। এক সপ্তাহ আগে এ খাতের পিই ছিল ১৫ দশমিক ১০ পয়েন্ট। পরের স্থানে থাকা টেলিযোগাযোগ খাতের পিইও ১৬ দশমিক ৯০ পয়েন্ট, এক সপ্তাহ আগে এ খাতের পিই ছিল ১৬ দশমিক ৯০ পয়েন্টেই। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে এ খাতের পিই অপরিবর্তিত রয়েছে।

বাকি খাতগুলোর পিই বাজার পিই’র ওপরে রয়েছে। এরমধ্যে সব থেকে বেশি পিই জীবন বিমা খাতের। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে এ খাতের পিই কিছুটা কমেছে। ৭৩ দশমিক ৩০ পয়েন্ট থেকে কমে জীবন বিমা খাতের পিই দাঁড়িয়েছে ৭২ দশমিক ৪৯ পয়েন্টে।

সর্বোচ্চ পিই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চামড়া খাত। এ খাতের পিই দাঁড়িয়েছে ৫০ দশমিক ৮০ পয়েন্টে, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৫০ দশমিক ২০ পয়েন্ট। তৃতীয় স্থানে থাকা সিমেন্ট খাতের পিই ৪৫ দশমিক ১০ পয়েন্ট, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪৫ দশমিক ২০ পয়েন্ট।

এছাড়া সিরামিক খাতের পিই দাঁড়িয়েছে ৪১ দশমিক ৫০ পয়েন্ট, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪১ দশমিক ২০ পয়েন্ট। অব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা লিজিংয়ের পিই আগের মতোই ৩৪ দশমিক ৭২ পয়েন্টে রয়েছে। ওষুধ খাতের পিই ১৮ দশমিক শূন্য ৭ পয়েন্ট থেকে ১৮ দশমিক শূন্য ২ পয়েন্ট হয়েছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে প্রকৌশল খাতের পিই ৩৮ দশমিক ৯২ পয়েন্ট থেকে ৩৮ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট, সেবা ও আবাসন খাতের পিই ২০ দশমিক ৬৮ পয়েন্ট থেকে ২১ দশমিক ২০ পয়েন্ট, খাদ্য খাতের পিই ২০ দশমিক ২৭ পয়েন্ট থেকে ২০ দশমিক ৩৭ পয়েন্ট, আইটি খাতের পিই ৩২ দশমিক ১৯ পয়েন্ট থেকে ৩১ দশমিক ৪১ পয়েন্ট হয়েছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের পিই আগের মতো ১৯ দশমিক ৪৩ পয়েন্টে রয়েছে।

এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৩টির। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪ দশমিক ৯৪ পয়েন্ট। এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক দশমিক ৭৪ পয়েন্ট এবং ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৩ দশমিক ৬০ পয়েন্ট কমেছে। আবার বাজার মূলধন কমেছে ৪৮৪ কোটি টাকা।