বিনিয়োগকারীদের পুঁজি নেই ২১ হাজার কোটি টাকা

ভোক্তাকন্ঠ ডেস্কঃ দরপতনের মাধ্যমে আরও একটি সপ্তাহ পার করেছে দেশের দুই শেয়ারবাজার। মাসটির তৃতীয় সপ্তাহে (১৬ মে থেকে ১৯ মে) লেনদেন, সূচক ও অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। তাতে নতুন করে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি অর্থাৎ বাজার মূলধন কমেছে ২১ হাজার কোটি টাকা। এর আগের সপ্তাহেও পুঁজি কমেছিল ৬ হাজার কোটি টাকা।

সপ্তাহব্যাপী দরপতনে চরম পুঁজি হারিয়ে অস্থির হয়ে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা। বাজারে আরও পতন হবে, পুঁজি আরও কমবে— এই ভয় ও আতঙ্কে রয়েছেন তারা। এ অবস্থায় অধিকাংশ বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রি করে টাকা তুলে নিচ্ছেন বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

তারা বলছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার নানা উদ্যোগ ও আশ্বাসের পরও শেয়ারবাজারে দরপতন থামছে না। এ কারণে বিনিয়োগকারীরা আস্থাহীন হয়ে পড়েছেন। তারা শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে রোববার (১৫ মে) শেয়ারবাজার বন্ধ থাকার পর সোমবার (১৬ মে) থেকে বৃহস্পতিবার (১৯ মে) পর্যন্ত মোট চার কর্মদিবসে লেনদেন হয়েছে। এই চার কর্মদিবসেই দরপতন হয়েছে।

এই সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৩৯৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ২০টির, কমেছে ৩৬০টির, আর অপরিবর্তিত ছিল ৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম। এর আগের সপ্তাহে (৮ থেকে ১২ মে) লেনদেন হওয়া ৩৯৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছিল ১২৩টির, কমেছিল ২২৭টির, আর অপরিবর্তিত ছিল ৩৩টির শেয়ারের দাম।

অধিকাংশ শেয়ারের দাম কমায় গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩০ ৭দশমিক ২২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৫৮ পয়েন্টে। অপর দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৪৯ দশমিক ১৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৮৩ পয়েন্টে। আর ডিএসই-৩০ সূচক ৯০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩১৬ পয়েন্টে। সবগুলো সূচক কমায় বিনিয়োগকারীদের বাজার মূলধন কমেছে ২১ হাজার ১৪০ কোটি ৮১ লাখ ৬৩ হাজার ৮৩৭ টাকা। এর আগের সপ্তাহে কমেছিল ৫ হাজার ৯৪৮ কোটি ৯ লাখ ১৪ হাজার ৮৬৭ টাকার মূলধন। অর্থাৎ দুই সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি নেই ২৭ হাজার কোটি টাকা।

মূলধনের পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ৪০ শতাংশ। বিদায়ী সপ্তাহে বাজারটিতে মোট লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ২৩৫ কোটি ৭৩ লাখ ৫৭ হাজার ৭২৫ টাকার শেয়ার। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৫ হাজার ৩৯৭ কোটি ৯৩ লাখ ১০ হাজার ৩০ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন কমেছে ২ হাজার ১৬২ কোটি ১৯ লাখ ৫২ হাজার ৩০৫ টাকা। যা শতাংশের হিসাবে ৪০ দশমিক ০৬ শতাংশ কমেছে।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গেল সপ্তাহে ৩৫১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৪টির, কমেছে ৩১২টির আর অপরিবর্তিত ছিল পাঁচটি কোম্পানির শেয়ারের দাম। এ বাজারের সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৮০৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৪৩৯ পয়েন্টে।

সিএসইতে বিদায়ী সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ১২১ কোটি ৩৪ লাখ ৭৫ হাজার ৯৩৫ টাকার। এর আগের ঈদ পরবর্তী সপ্তাহে (৮ থেকে ১২ মে) লেনদেন হয়েছিল ১৬৬ কোটি ৯৭ লাখ ৮৭ হাজার ৫৮৯ টাকার। লেনদেন আগের সপ্তাহের চেয়ে কমেছে।