‘শুক্রবার থেকে ভোজ্যতেল কেনাবেচায় পাকা রশিদ দিতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আগামী শুক্রবার (১১ মার্চ) থেকে ভোজ্যতেল কেনাবেচার সময় ব্যবসায়ীদের অবশ্যই পাকা রশিদ দিতে হবে। রশিদ ছাড়া ভোজ্যতেলের কোনো ব্যবসা করা যাবে না বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) এএইচএম সফিকুজ্জামান।

তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় দেয়া হলো। এসময় পর থেকে পণ্য কেনার সময় অবশ্যই পাকা রশিদ নিয়ে পণ্য কিনতে হবে। এবং বিক্রির সময়ও পাকা রশিদ দিতে হবে। পাকা রশিদ ছাড়া কোনো ব্যবসা করা যাবে না।

মঙ্গলবার (৮ মার্চ) কারওয়ান বাজারে টিসিবি ভবনে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়ে খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় এ কথা জানান তিনি।

সফিকুজ্জামান বলেন, ভোজ্যতেল নিয়ে এখন ব্লেম গেইম চলছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা পাইকারী ব্যবসায়ীদের দোষ দেয়, পাইকারী ব্যবসায়ীরা মিলারদের দোষ দেয় আবার মিলাররা রিফাইনারী কোম্পানির দোষ দেয়। এই দোষা দোষী আর চলতে দেয়া হবে না। সকল পক্ষকে এক মুখোমুখি করে এর সমাধান করতে হবে। ব্যবসায়ীদের জন্য সাধারণ জনগণ জিম্মি হয়ে পড়েছে।

তিনি বলেন, ভোজ্যতেলের দাম বাড়ার কোন সুযোগ নেই। দেশে পর্যাপ্ত পরিমানের তেলের মজুদ আছে। আগামী রমজান পর্যন্ত কোন প্রকার তেলের ঘাটতি পরবে না। কিছু ব্যবসায়ী ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধকে কাজে লাগিয়ে সংকটের ধোঁয়াশা সৃষ্টি করে দাম বাড়ানোর পায়তারা করছে।

অভিযানের বিষয়ে ভোক্তা অধিকারের ডিজি বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের যে অভিযান চলছে, তা চলমান থাকবে।

সভায় পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা সঠিকভাবে ব্যবসা পরিচালনায় সর্বাত্মক সহযোগিতা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ভোক্তা অধিদফতর।

তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণে তিনটি বিষয়ে সুপারিশ করেন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন।

তিনি বলেন, পর্যাপ্ত পরিমাণ ভ্যোজ্যতেলের সাপ্লাই থাকতে হবে। প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ টন তেল বাজারে আসা প্রয়োজন। যাদের ডিউ এক মাস হয়ে গেছে তারা এখন তেল তুলতে পারবে না। তারা ঈদের পর থেকে তেল তুলবে। পাকা রশিদ নিতে ব্যবসায়ীদের সময় দিতে হবে। এসময়ের মধ্যে খুচরা পর্যায়ে যে অভিযান চলছে তা আপাতত বন্ধ রাখতে অনুরোধ জানাচ্ছি।

তিনি দাবি করেন, মিল মালিকরা যে পরিমাণ ভোজ্যতেল স্টক আছে বলছেন প্রকৃত অর্থে সে পরিমাণ নেই।

মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আজমল হোসেন বাবলু বলেন, প্রতিদিন বাজারে ২১ হাজার ব্যারেল তেল প্রয়োজন। কিন্তু সে তুলনায় পর্যাপ্ত সাপ্লাই নেই। পর্যাপ্ত তেল বাজারে থাকলে দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

তিনি বলেন, অভিযানের কারণে ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমরা আর তেল বিক্রি করবো না।

কারওয়ান বাজারের পাইকারী ব্যবসায়ী আবু বক্কর বলেন, সরকার নির্ধারিত যে তেলের দাম দেয়া হয়েছে তার থেকে বেশি দামে আমাদের তেল কিনতে হয়। তাহলে কম দামে বিক্রি করবো কিভাবে। আমি খোলা পামওয়েল ১৩৭.৫ টাকা কিনে খরচ বাদ দিয়ে বিক্রি করছি ১৪০ টাকায়। যা সরকার নির্ধারিত দামের থেকে বেশি।

তিনি আরও বলেন, তেল কিনতে গেলে কোন ব্যবসায়ী পাকা রশিদ দেয় না।

নিউ মার্কেট কাঁচা বাজার ব্যবসীয় সমিতির এক নেতা বলেন, আমরা ব্যবসায়ীরাও যে খুব ভালো তা নয়, সুযোগ পেলেই দাম বাড়িয়ে দেই। দাম বাড়িয়ে দিয়ে একজন আরেকজনের উপরে দোষ চাপাই। রমজানকে সামনে রেখে আমাদের সকল ব্যবসায়ীদের উচিত লাভ কমিয়ে দিয়ে ব্যবসা করা।

আরইউ