শেয়ারবাজারে আশার আলো: নতুন বিনিয়োগের সম্ভবনা

শেয়ারবাজারে তারল্যের জোগান বাড়াতে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) ১০০ কোটি মার্কিন ডলার (প্রায় সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা) বন্ড ইস্যু করবে। সুইজারল্যান্ডের একটি ব্যাংক এ বন্ডে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে।

গত মঙ্গলবার পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম। সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির কমিশনার, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আইসিবির চার সদস্যের প্রতিনিধি ও শেয়ারবাজার ডিজিটালাইজেশন প্রকল্পের পরামর্শক সুইস নাগরিক মি. জুলিয়ান।

সভার সিদ্ধান্তের বিষয়ে বিএসইসির মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, এ বন্ডের কুপন হার হবে ৩ শতাংশ। এর মাধ্যমে আইসিবি যে অর্থ সংগ্রহ করবে, তার মধ্যে তিন হাজার কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানটি তার উচ্চ সুদের ঋণ পরিশোধে ব্যয় করবে। চার হাজার কোটি টাকা শেয়ারবাজারের ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে স্বল্প সুদে ঋণ হিসেবে বিতরণ করবে। এর বাইরে বাকি টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য রাখবে আইসিবি।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, বন্ডটি ইস্যু হলে শেয়ারবাজারের ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো আইসিবির কাছ থেকে স্বল্প সুদে ঋণ নিতে পারবে। সেই ঋণ বিএসইসির বেঁধে দেওয়া সর্বোচ্চ ১২ শতাংশ সুদে গ্রাহকের মধ্যে বিতরণ করতে পারবে। এ ছাড়া আইসিবি তার উচ্চ সুদের ঋণ শোধ করলে, তাতে প্রতিষ্ঠানটির সক্ষমতা অনেক বেড়ে যাবে।

বিএসইসি জানিয়েছে, গত বছরের ১৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তৎকালীন বিএসইসির চেয়ারম্যান খায়রুল হোসেনের বৈঠকে পুঁজিবাজারকে গতিশীল করতে ছয় নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। সেই ছয় নির্দেশনার মধ্যে দ্বিতীয়টি ছিল মার্চেন্ট ব্যাংক ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য সহজ শর্তে ঋণসুবিধার বিষয়টি পর্যালোচনা করা। তৃতীয় নির্দেশনা ছিল আইসিবির বিনিয়োগ সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

প্রধানমন্ত্রীর এ দুই নির্দেশনার আলোকে আইসিবির বিনিয়োগ সক্ষমতা বৃদ্ধি ও বাজারের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য স্বল্প সুদের ঋণের ব্যবস্থা করতে আইসিবির পক্ষ থেকে এ বন্ড ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এদিকে বিএসইসি শেয়ারবাজারেও ঋণের সুদহার সর্বোচ্চ ১২ শতাংশ বেঁধে দিয়েছে। নতুন ও পুরোনো সব ঋণের ক্ষেত্রে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এ সুদহার কার্যকর হবে। তবে ঋণদাতা ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর কেউ কেউ বলছে, তারা ব্যাংক থেকে স্বল্প সুদে ঋণ পাচ্ছে না। তাদের জন্য স্বল্প সুদের ঋণের বন্দোবস্ত করা হবে আইসিবির বন্ডের মাধ্যমে সংগ্রহ করা তহবিলের অর্থে।

প্রথম আলো/তানিন/এস.এইচ