সানফ্লাওয়ার-অলিভ অয়েল আমদানিতে উৎসাহ দিতে শুল্ক কমানোর প্রস্তাব

ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: পাম অয়েলের শীর্ষস্থানীয় উৎপাদক ইন্দোনেশিয়া হঠাৎ করেই ভোজ্যতেল রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়ায় ভোজ্যতেলের বিশ্ববাজার নড়েচড়ে বসেছে। অন্যান্য সরবরাহকারী দেশে ঢুকছে নতুন ক্রেতা। বেড়ে যাচ্ছে পাম ও সয়াবিন তেলের দাম। বাংলাদেশের বাজারেও এর নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে সানফ্লাওয়ার, ক্যানোলা ও অলিভ অয়েলের মতো ভোজ্যতেল আমদানিতে উৎসাহ দিতে শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। সম্প্রতি কমিশনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দেওয়া হয়েছে।

ট্যারিফ কমিশনের চিঠিতে বলা হয়েছে, দেশে বছরে ২০ লাখ টন ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে। এর ৯৫ ভাগই আমদানিনির্ভর। সয়াবিন ও পাম অয়েলই প্রধানত আমদানি হয়। সামান্য পরিমাণে সানফ্লাওয়ার, ক্যানোলা ও অলিভ অয়েল আমদানি হয়ে থাকে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে এক হাজার ৬০০ টন এ ধরনের তেল আমদানি হয়, যা থেকে সরকার আট কোটি ৮৫ লাখ টাকার রাজস্ব পায়। মূলত উচ্চহারে শুল্ক থাকায় এ জাতীয় তেলের আমদানি কম হয়। কিন্তু বিশ্ববাজারে এখন পাম অয়েলের সরবরাহে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় সানফ্লাওয়ার ও ক্যানোলার মতো তেল আমদানি উৎসাহিত করা দরকার। এ জন্য শুল্ক কমানোর পাশাপাশি ট্যারিফ ভ্যালু তুলে দেওয়ার প্রস্তাব করেছে কমিশন।

বর্তমানে পরিশোধিত সানফ্লাওয়ার তেল আমদানিতে মোট ৩২ শতাংশ আর অপরিশোধিত তেল আমদানিতে ৩১ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। এ ছাড়া বাল্ক ও টিনজাত অবস্থায় অলিভ অয়েল আমদানিতে ৩৭ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৫৮ দশমিক ৬০ শতাংশ শুল্ক দিতে হচ্ছে। আর ক্যানোলা আমদানিতে শুল্ক দিতে হচ্ছে ৩৭ শতাংশ। কমিশন থেকে পরিশোধিত ও অপরিশোধিত সানফ্লাওয়ার আমদানির শুল্ক ২০ শতাংশ, পরিশোধিত অলিভ অয়েল আমদানিতে ৩১ শতাংশ আর অপরিশোধিত অলিভ অয়েল আমদানিতে ২৫ শতাংশ এবং ক্যানোলা আমদানিতে ২৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে।

দেশে ভোজ্যতেলের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার গত ১৬ মার্চ অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম অয়েলের আমদানি পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করে। একই সঙ্গে উৎপাদন ও বিপণন পর্যায়ে সব ধরনের ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়। এর ফলে দেশে প্রতি লিটার ভোজ্যতেলের দাম ৮ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। কিন্তু ইন্দোনেশিয়ার ঘোষণার পর বাংলাদেশের বাজারে তেলের সরবরাহ কমে গেছে। সংশ্নিষ্টরা বলছেন, পরিস্থিতির সুযোগে ব্যবসায়ীরা আরেক দফা দাম বাড়ানোর চেষ্টা করছে।