২২ হাজার কোটি টাকা এজেন্ট ব্যাংকারদের কাছে

ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক:

এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ওপর  গ্রাহকদের আস্থা বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের কাছে বেড়েছে আমানত । যে কারণে এ বছরের সেপ্টেম্বর শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে ২২ হাজার ২৬১ কোটি টাকার আমানত রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য।

গত বছরের সেপ্টেম্বর শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে খোলা হিসাবগুলোতে আমানত ছিল ১৩ হাজার ৪০ কোটি টাকা। এ বছর যা বেড়েছে প্রায় ৭০ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, এখন ৫-৬ কোটি গ্রাহক নিয়মিত এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন করছেন। এদের একটি বড় অংশ ব্যবসার প্রয়োজনে নিয়মিত টাকা ট্রান্সফার (টিটি) করছেন। আরেকটি অংশ রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। এ ছাড়া হিসাব খুলেছেন এক কোটি ২৯ লাখ ১১ হাজার ৫৪১ জন। এর মধ্যে নারী গ্রাহক আছেন ৬০ লাখ ৪২ হাজার ৯৪৬ জন। গ্রাহকদের মধ্যে এক কোটি ১১ লাখ ২৭ হাজার ৫৪১ জনই প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাসিন্দা।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষক ড. জায়েদ বখত বলেন, এজেন্ট আউটলেটগুলো মূল ব্যাংকের মতোই সেবা দিচ্ছে। এ ছাড়া জনগণের রাখা আমানত চলে যাচ্ছে মূল ব্যাংকের কাছে। যে কারণে আমানতকারীরা নিশ্চিন্তে টাকা রাখছেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত একমাসে এজেন্টদের কাছে নতুন করে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা জমা রেখেছেন আমানতকারীরা। তিন মাসে রেখেছেন ১ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা। অর্থাৎ তিন মাসে আমানতের প্রবৃদ্ধি ৯.২৪ শতাংশ।

সেপ্টেম্বরের শেষে জমাকৃত আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২২ হাজার ২৬১ কোটি টাকায়। যা আগস্টের শেষে ছিল ২১ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা। জুন শেষে আমানত ছিল প্রায় ২০ হাজার ৩৭৯ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যনুযায়ী, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গ্রাহকরা ৮ হাজার ৫০৩ কোটি টাকা জমা রেখেছেন ইসলামী ব্যাংকের এজেন্টদের কাছে।

এজেন্টের মাধ্যমে ঋণ বিতরণে শীর্ষে আছে ব্র্যাক ব্যাংক। এ সেবার আওতায় বিতরণ করা ঋণের ৬৪ শতাংশই ব্যাংকটির দখলে। দ্বিতীয় অবস্থানে ব্যাংক এশিয়া (১৭ শতাংশ) ও তৃতীয় দি সিটি ব্যাংক (১১ শতাংশ)।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ খাতে নতুন করে ৭ লাখ ৬ হাজার ব্যাংক হিসাব খোলা হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ গ্রাহক ৫২ শতাংশ, নারী ৪৭ শতাংশ এবং প্রতিষ্ঠান ১ শতাংশ। হিসাবগুলোর মধ্যে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর বাসিন্দা আছে ৮৬ শতাংশ।

জানা গেছে, এজেন্ট ব্যাংকিং সেবার গ্রাহকদের বড় একটি অংশ রেমিট্যান্স গ্রহণ করে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ খাতে ৭ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকার রেমিট্যান্স বিতরণ করেছে এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটগুলো।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ব্যাংকগুলো তাদের এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা ইউনিয়ন পর্যায়ে নিয়ে গেছে। আমানত রাখা, ঋণ বিতরণ ও রেমিট্যান্স আনার পাশাপাশি তারা স্কুল ব্যাংকিং চালু করেছে। সরকারের সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির ভাতাও বিতরণ করছে এজেন্টরা।