রুপিতে বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য শুরু

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে রুপির ব্যবহার শুরু হলো। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর হোটেল লা মেরিডিয়ানে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ভারতীয় হাইকমিশনের যৌথ আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ থেকে তামিম এগ্রো লিমিটেড ১৬ মিলিয়ন রুপির বেশি রপ্তানি এলসি খুলেছে এবং নিতা কোম্পানি লিমিটেড প্রায় ১২ মিলিয়ন রুপির আমদানি এলসি খুলেছে।

অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা বলেন, ‘এটা দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতার অঙ্গীকারের নিদর্শন।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘ডলারের ওপর চাপ কমাতেই, দীর্ঘ চিন্তা ভাবনা করে আমরা এই পথে গিয়েছি। রুপিতে লেনদেনের কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি বেড়ে যাবে।’

রুপিতে লেনদেনের জন্য এরই মধ্যে দুই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে অনুমতি পেয়েছে বাংলাদেশের সোনালী ও ইস্টার্ন ব্যাংক এবং ভারতীয় স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ও আইসিআইসিআই ব্যাংক। শুরুতে দুই দেশের এই চারটি ব্যাংকের মাধ্যমে রুপিতে আমদানি-রপ্তানি পণ্যের মূল্য পরিশোধ করা যাবে।

বাংলাদেশ নিট পোশাক উৎপাদক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মো. হাতেম বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ব্যবধান অনেক বেশি। ফলে ভারতের প্রস্তাব তত্ত্বগতভাবে ঠিক হলেও বাস্তবে কঠিন হতে পারে। ভারত থেকে প্রায় ২০০ কোটি ডলারের যে রপ্তানি আয় বাংলাদেশ করে, সেই পরিমাণ বাণিজ্য ভারতীয় মুদ্রায় করার কথা ভাবা হচ্ছে। সেটি হলেও এক হাজার ২০০ কোটি ডলারের বেশি যে আমদানি ব্যয়, তা ডলারেই করতে হবে।’

হিসাব বলছে, গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ভারত থেকে এক হাজার ৩৬৯ কোটি ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ, যা চীনের পরেই সর্বোচ্চ (মোট আমদানি ব্যয়ের ১৮ দশমিক ১০ শতাংশ)। এর বিপরীতে দেশটিতে রপ্তানি করা হয়েছে মাত্র ১৯৯ কোটি ডলার মূল্যের পণ্য।

বৈদেশিক বাণিজ্যে লেনদেন সহজ করতে এবং ব্যয় সাশ্রয়ে বিকল্প মুদ্রা চালুর দাবির প্রেক্ষিতে গত কয়েক মাস ধরে উভয় দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে আলোচনার পর সীমিত পরিসরে রুপিতে লেনদেন শুরু হচ্ছে। এতে উভয় দেশের উদ্যোক্তাদের বাণিজ্য খরচ কমে আসার সঙ্গে ডলার নির্ভরতাও কিছুটা কমে আসবে বলে মনে করছেন ব্যাংকার ও ব্যবসায়ীরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রতি বছর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ১৬ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়। এর মধ্যে দুই বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ। একই সময়ে বাংলাদেশ ১৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করে।