শেয়ারবাজারে লেনদেন বেড়েছে বছরের শেষ কার্যদিবসে

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: চলতি বছরের শেষ কার্যদিবস (বৃহস্পতিবার) দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেন বেড়েছে। দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে ছয়টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে চারটি মিউচুয়াল ফান্ড এবং দুটি কোম্পানি রয়েছে।

এই ছয় প্রতিষ্ঠানের দাপটের মধ্যে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে। তবে কমেছে ইসলামী শরিয়াহ্ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত সূচক। আর প্রধান মূল্যসূচকের সঙ্গে বেড়েছে লেনদেন।

ডিএসই’র মতো মূল্যসূচকে মিশ্র প্রবণতা দেখা গেছে অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। তবে এ বাজারটিতে প্রধান মূল্যসূচক কমেছে। আর বেড়েছে বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত সূচক। অবশ্য ডিএসই’র মতো এই বাজারেও লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে।

২০২৩ সালের বাকি আছে মাত্র তিন দিন। এর মধ্যে শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক বন্ধ। আর ৩১ ডিসেম্বর রোববার ব্যাংক হলিডে। ফলে ৩১ ডিসেম্বর ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। এ কারণে শেয়ারবাজারেও লেনদেন হবে না। এ হিসাবে বছরের শেষ কার্যদিবস আজ বৃহস্পতিবার।

এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসই’র প্রধান সূচক ৪ পয়েন্ট কমে যায়। তবে অল্প সময়ের মধ্যে কয়েকটি মিউচুয়াল ফান্ড দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখাতে থাকে। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে অন্য খাতের ওপরও। ফলে পতন থেকে বেরিয়ে বড় উত্থানের আভাস দিতে থাকে শেয়ারবাজার।

তবে লেনদেনের শেষদিকে এসে দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করা একাধিক মিউচুয়াল ফান্ডের দাম কমে যায়। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে অন্য খাতেরও ওপরও। ফলে দাম বাড়ার তালিকা কিছুটা হলেও ছোট হয়ে আসে। অবশ্য এর মধ্যেও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখাতে থাকে। ফলে প্রধান মূল্যসূচক বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিতে পেরেছে ৯৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৭২টির। আর ১৮২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় থাকা ছয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম একদিনে যতটা বাড়া সম্ভব ততোটাই বেড়েছে। এমনকি লেনদেনের বেশির ভাগ সময় এই ছয় প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় আদেশের ঘর শূন্য পড়ে থাকে।

এর মধ্যে রয়েছে- সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, এমারেল্ড অয়েল, আইসিবি এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট মিউচুয়াল ফান্ড ১ : স্কিম ১, প্রাইম ব্যাংক ফার্স্ট আইসিবি এএমসিএল মিউচুয়াল ফান্ড, আইএফআইএল ইসলামীক মিউচুয়াল ফান্ড-১, আইসিবি এএমসিএল সোনালী ব্যাংক লিমিটেড ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড।

বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ার ফলে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ২ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২৪৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৬৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৯৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

প্রধান মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬৬০ কোটি ৬১ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৪৮৩ কোটি ৭ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ১৭৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।

টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্টের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৩ কোটি ৪৭ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিডি থাই অ্যালুমেনিয়ামের ২৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। ২৬ কোটি ৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ওরিয়ন ইনফিউশন, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, অলিম্পিক এক্সসরিজ, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন, এমারেল্ড অয়েল, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস এবং গোল্ডেন জুবিলি মিউচুয়াল ফান্ড।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ২০৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৬টির এবং ৯৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি ২৩ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।