‘মূল্যবৃদ্ধির ঊর্ধ্বগতিতে অসহায় ভোক্তা’

মো. রইস উদ্দিন সরকার: নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে সারাদেশের ন্যায় নাটোরের ভোক্তারাও আজ অসহায়। ডলারের মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে আগেই বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীসহ অন্যান্য পণ্যের দাম। আর এখন কাঁচাবাজারে তড়ি-তরকারিতে লেগেছে আগুন। ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজির নিচে আলু আর পটল ছাড়া কোনো সবজি বাজারে নেই। এ সকল সবজির গত বছরও মূল্য ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি। ১০ থেকে ২০ টাকার আলু, পটল কিনতে হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। আর আগেই তো অনুভব করতে হয়েছে ১০০ টাকার পেঁয়াজের ঝাঁজ আর ১০০০ টাকার কাঁচা মরিচের ঝাল। যে কুড়িকচু গত বছর এ সময়ে ১০ থেকে ২০ টাকা কেজি সেটা এখন ভোক্তাদের কিনতে হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি। কল্পনা করা যায়!

সাধারণ ভোক্তারা বলছেন, মানুষ এখন তরকারি দিয়ে ভাত খাবে, নাকি ভাত দিয়ে তরকারি, নাকি পানি দিয়ে ভাত।

বিইআরসি প্রতি মাসে এলপিজির মূল্য নির্ধারণ করছে। কিন্তু বাজারে নির্ধারিত মূল্যে কোনো কোম্পানিরই এলপিজি পাওয়া যায় না। নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ১০০ থেকে ২০০ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে এলপিজি। কোনো দোকানেই মূল্য তালিকার বালাই নেই। মানছে না কেউই সরকার নির্ধারিত মূল্য। সিন্ডিকেট করে বাড়ানো হচ্ছে এ সকল পণ্যের মূল্য।

মূল্য নিয়ন্ত্রণে জনগণের ট্যাক্সের টাকায় রয়েছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসন। আছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে স্থানীয় ভাবে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে টাস্ক ফোর্স  কমিটি। প্রতি মাসে যার একটি মিটিং হওয়ার কথা থাকলেও হয় না কোনো মিটিং। নেই কোনো মনিটরিং ব্যবস্থা। বাজার নিয়ন্ত্রণে তাদের কোনো ভূমিকাই চোখে পড়ে না।

সাধারণ ভোক্তারা মূল্যবৃদ্ধির এই ঊর্ধ্বগতিতে অসহায় আর একশ্রেণীর ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি।

কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) মনে করে স্থানীয় প্রশাসন, ভোক্তা ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধি সমন্বয়ে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করে ব্যবসায়ীদের এই সিন্ডিকেট ভেঙে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতার  মধ্যে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা জরুরী। বাজারের এই অবস্থা চলতে থাকলে নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্তের তিন বেলা খাবার অবস্থা থাকবে না। সমাজের একটি বড় অংশ পুষ্টিহীনতায় পড়ে যাবে।

সাধারণ সম্পাদক, ক্যাব, নাটোর জেলা শাখা।