আন্দোলন অহেতুক, শিগগির নন-ক্যাডারে বড় নিয়োগ: পিএসসি চেয়ারম্যান

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: ‘৪০তম বিসিএস পরীক্ষায় নন-ক্যাডারে সর্বোচ্চ সংখ্যক নিয়োগ দেওয়া হতে পারে। দ্রুত সময়ে এ বিষয়ে ঘোষণা দেওয়া হবে। নন-ক্যাডারে নিয়োগের সুপারিশের জন্য পিএসসির সামনে যে আন্দোলন করা হচ্ছে তা অহেতুক ও ভিত্তিহীন। আন্দোলনকারীদের কেউ কেউ পিএসসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করছেন। আন্দোলন বন্ধ করে নিজ নিজ কাজে মনোযোগী হোন।’

বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন এসব কথা বলেন।

পিএসসি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন বলেন, পিএসসি বিধি মোতাবেক সব কাজ পরিচালনা করে। আন্দোলনের মুখে নিয়ম পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। ২০১০ সালে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ (বিশেষ) বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। ২০১৪ সালে সেটি সংশোধন করা হয়। বর্তমানে সেটি কার্যকর করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন আইন ব্যত্যয় করে নন-ক্যাডারে নিয়োগ পরিচালনা করা হয়েছে। বর্তমানে বিধি মোতাবেক এ স্তরে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হবে।

তিনি বলেন, পিএসসি বিধি মোতাবেক সব কাজ পরিচালনা করে। আন্দোলনের মুখে নিয়ম পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। ২০১০ সালে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ (বিশেষ) বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। ২০১৪ সালে সেটি সংশোধন করা হয়। বর্তমানে সেটি কার্যকর করা হচ্ছে।

আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, ৪ নম্বর ধারায় কমিশন বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগের জন্য প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের বিষয়ে কমিশনে সংশ্লিষ্ট পদের অনুরোধপত্র প্রাপ্তির তারিখের ক্রমানুসারে এসব পদের বিবরণ ও সংখ্যা উল্লেখ করবে। ৭ এর ৩ নম্বর উপধারা মোতাবেক উত্তীর্ণ কোন প্রার্থীর নাম সংরক্ষিত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বা কমিশন নিয়োগের জন্য সুপারিশ করলে পরবর্তীসময়ে প্রার্থীর নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের কোনো অধিকার থাকবে না।

২০১৪ সালের সংশোধনীতে নন-ক্যাডারে দ্বিতীয় শ্রেণির সুপারিশের বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া পদে নিয়োগের অনুরোধ প্রাপ্তি সাপেক্ষে কমিশন বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগের জন্য প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে পূরণযোগ্য শূন্যপদের বিবরণ ও সংখ্যা উল্লেখ করবে। সেক্ষেত্রে কমিশন বিভিন্ন সময় রাষ্ট্রীয় বিশেষ প্রয়োজনে সরকারের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে শূন্যপদের সংখ্যা বাড়াতে-কমাতে পারবে। অনুরোধ প্রাপ্তির ক্রমানুসারে কমিশন বিধি ৫ এর বিধান অনুসারে প্রস্তুত প্রথম শ্রেণির তালিকার সব পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করার পর প্রস্তুত করা তালিকা থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করবে।

তবে শর্ত থাকে যে, কমিশন নির্ধারিত সময়সীমার পর শূন্যপদে নিয়োগের অনুরোধ বিবেচিত হবে। বিগত সময়ে ২৮তম থেকে পরবর্তীসময়ে অনুষ্ঠিত হওয়া সব বিসিএসে বিষয়টি উল্লেখ করা না হলেও সেটি কার্যকর করতে আইনে উল্লেখ করা হয়েছে।

পিএসসির চেয়ারম্যান বলেন, বিগত সময়ে আয়োজন হওয়া ৪৪তম বিসিএস পরীক্ষায় এই বিধি অনুসরণ করা হয়নি। আগামী ৩০ নভেম্বর ৪৫তম বিসিএস পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। সেখানে আইন অনুযায়ী ক্যাডার ও নন-ক্যাডারে প্রাপ্ত পদ ও সংখ্যা উল্লেখ করা হবে। বর্তমানে ৪০তম বিসিএস পরীক্ষায় নন-ক্যাডারে নিয়োগপ্রত্যাশীরা নিয়োগের সুপারিশের জন্য পিএসসির সামনে অহেতুক আন্দোলন শুরু করেছে। এ পরীক্ষায় ৮ হাজার ১৬৬ জন নন-ক্যাডারের তালিকায় রয়েছেন। মেধাক্রম অনুযায়ী বিগত বিসিএসের মতো প্রথম-দ্বিতীয় শ্রেণি কর্মকর্তা পদের জন্য সুপারিশ করা হবে।

তিনি বলেন, ৩৮তম বিসিএস পরীক্ষায় শূন্যপদ পাওয়া সাপেক্ষে তিন হাজারের বেশি সর্বোচ্চ সংখ্যক নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ৪০তম বিসিএসেও সেটি হতে পারে। তাদের জন্য একটি সুখবর অপেক্ষা করছে। দ্রুত সময়ে সেটি ঘোষণা করা হবে। সব শূন্যপদে তাদের নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হবে না। এতে পরবর্তী বিসিএসে উত্তীর্ণরা বঞ্চিত হবেন। সেটি বিবেচনা করে বিধি মোতাবেক সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। তাই রাস্তায় বসে আন্দোলন করলে আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। পিএসসির সে ক্ষমতা নেই।

’১৪ সালের আইন কেন এতদিন অনুসরণ করা হয়নি জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যান বলেন, বিগত সময়ে যারা দায়িত্বে ছিলেন তারা এর জবাব দিতে পারবেন। পরবর্তী সব বিসিএস পরীক্ষায় আইন অনুসরণ করে ক্যাডার ও নন-ক্যাডার পদের বিবরণ এবং সংখ্যা উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।

বিশৃঙ্খলা করে কিছু আদায় করা যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আন্দোলনকারীদের কেউ কেউ পিএসসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছে। বাইরে যাওয়ার সময় আমাকে পথরুদ্ধ করেছে। কমিশনের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিষয়টি সরকারের উচ্চ মহলে অবগত করা হবে। এ বিষয়ে সরকার পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে। আন্দোলনকারীদের ছয় দফা দাবি ভিত্তিহীন।

এদিকে কয়েকদিন ধরে ৪০তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নন-ক্যাডার প্রার্থীরা নিয়োগ পেতে টানা আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন। আন্দোলনের সমন্বয়কারী হৃদয় বলেন, ৪০তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের দিনও ৩৮তম বিসিএসে নন-ক্যাডারে সুপারিশ করা হয়েছে। আমাদের সময়ে এসে কেন অন্য নিয়ম চালু করা হবে। বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি। নিয়োগের ক্ষেত্রে সেটি হতে পারে না।

তিনি বলেন, ৪০তম বিসিএসের মাধ্যমে আট হাজার ১৬৬ জন নন-ক্যাডারের তালিকায় রয়েছেন। তাদের মধ্যে তিন হাজারের মতো প্রথম শ্রেণির চাকরিতে যোগদান করেছেন। পাঁচ হাজারের মতো প্রার্থী অপেক্ষমাণ। তাদের জন্য যেসব শূন্যপদ সংগ্রহ করা হলেও সেখান থেকে অনেক পদ অন্য বিসিএসের জন্য বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। ৪১তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের আগে সব শূন্যপদে নিয়োগ নিশ্চিত করতে এ আন্দোলন।

পিএসসি চেয়ারম্যানের এ বিষয়ে লিখিত আশ্বাস পেলে তারা আন্দোলন থেকে সরে যাবেন। অন্যথায় আন্দোলন চলবে বলে জানান তারা। জাগো নিউজ।