জ্বালানি সনদে স্বাক্ষর না করার দাবিতে ক্যাবের গণস্বাক্ষর হস্তান্তর

ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: জ্বালানি সনদ চুক্তিতে স্বাক্ষর না করার আহ্বান জানিয়ে প্রায় ২৬ হাজার গণস্বাক্ষর সংবলিত আবেদনপত্র সরকারের কাছে হস্তান্তর করেছে কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।

মঙ্গলবার ক্যাবের প্রতিনিধি দল জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব ড. খায়রুজ্জামান মজুমদারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ আবেদন হস্তান্তর করেন।

এ সময় ক্যাব প্রস্তাবিত জ্বালানি রূপান্তর নীতি গ্রহণেরও আহ্বান জানায় ভোক্তা-অধিকার নিয়ে কাজ করা এ সংগঠনটি।

ক্যাবের পক্ষ থেকে জ্বালানি সনদ চুক্তিতে বাংলাদেশ সরকারকে স্বাক্ষর না করা ও ক্যাব প্রস্তাবিত জ্বালানি রূপান্তর নীতি ২০২২ এর আলোকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাত সংস্কারের দাবি জানানো হয়। এছাড়াও দাবি সংবলিত একটি আবেদনপত্রসহ মোট ২৫ হাজার ৭২০ জনের গণস্বাক্ষরের কপি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিবের কাছে হস্তান্তর করা হয়। 

প্রতিনিধি দলে ছিলেন ক্যাবের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ও জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট হুমায়ুন কবীর ভূঁইয়া, কোষাধ্যক্ষ ড. মুঞ্জুর-ই-খোদা তরফদার, ভোক্তাকণ্ঠের সম্পাদক কাজী আব্দুল হান্নান ও প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর আহম্মদ একরামুল্লাহ। 

আলোচনায় অংশ নিয়ে অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম বলেন, ‘এনার্জি চার্টার ট্রিটি একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি যা বাংলাদেশে জ্বালানিখাতে ও ভোক্তাদের স্বার্থ বিঘ্নিত হবার আশঙ্কা রয়েছে। তাই এই চুক্তিতে সরকারের স্বাক্ষর না করার জন্য ক্যাব সারাদেশ থেকে ২৫ হাজার ৭২০টি গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করেছে। এই চুক্তিতে বাংলাদেশ সরকার স্বাক্ষর করলে জ্বালানি অধিকার ও ভোক্তা স্বার্থ সুরক্ষা করা সম্ভব হবে না। তাই সরকারকে এনার্জি চার্টার ট্রিটিতে স্বাক্ষর না করার দাবি জানাচ্ছে ক্যাব।’

তিনি আরও বলেন, ‘ক্যাব প্রস্তাবিত বাংলাদেশ জ্বালানি রূপান্তর নীতি ২০২২ এ কিভাবে ভোক্তাদের জ্বালানি অধিকার খর্ব হচ্ছে, কিভাবে ভোক্তাদের জ্বালানি অধিকার বৃদ্ধি করা যায় এবং জ্বালানিখাতে কোন কোন জায়াগায় কাজ করতে হবে তা সুস্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আমরা সরকারকে বলতে চাই জ্বালানি রূপান্তর নীতিতে উল্লেখিত বিষয়গুলো বিবেচনায় নিলে জ্বালানিখাতে ভোক্তাদের অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।’

ক্যাবের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি বলেন, ‘বিইআরসি আইনের সংশোধন করার ফলে জ্বালানিখাতে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা এখন সরকারের হাতে চলে এসেছে। সে ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জ্বালানিখাতের কোম্পানিগুলোর বোর্ডের চেয়ারম্যান বা পরিচালক হলে তা স্বার্থের দ্বন্দ্ব তৈরি করবে।’

জ্বালানিখাতে সরকারের কি ব্যবস্থা নেয়া দরকার বলে ক্যাব মনে করছে সেসব বিষয়ে জ্বালানি রূপান্তর নীতিতে প্রস্তাব করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। 

ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবীর ভূঁইয়া বলেন, ‘এনার্জি চার্টার ট্রিটিতে বাংলাদেশ স্বাক্ষর করলে ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই সরকারের নিকট আমাদের দাবি এই ট্রিটিতে বাংলাদেশ সরকার যেন স্বাক্ষর না করে।’

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব ড. খায়রুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘জ্বালানিখাতে ভোক্তারা হচ্ছেন বড় অংশীজন। ভোক্তাদের অধিকার ক্যাব ভালো ভাবে দেখে থাকে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে জ্বালানিখাতের বিষয়গুলো আপনারা দেখেছেন। ক্যাবের বিষয়গুলো মন্ত্রণালয় ভেবে দেখবে।

সভায় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (অপারেশন) এস এম জাকির হোসেন ও অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) মো. হুমায়ুন কবীর উপস্থিত ছিলেন।