ঈদযাত্রায় স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত

ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: মুসলিম সম্প্রদায়ের বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদ-উল-আযহা অনুষ্ঠিত হবে আগামী রোববার (১০ জুলাই)। করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি এড়িয়ে স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে রাজধানী ছাড়ছেন অসংখ্য মানুষ।

বিশেষজ্ঞ বলছেন, এবার কোরবানির পশুর হাট ও ঈদ যাত্রায় কোন রকম স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই বাড়ি ফিরছেন মানুষ। বাড়ি গিয়েও অনেক ধরনের মানুষের সঙ্গে তারা মিশবেন। ফলে দেশে করোনা ভাইরাসের যে ঊর্ধ্বমূখী প্রবণতা সেটি কয়েকগুন বাড়তে পারে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, গত সাত দিনে নমুনা পরীক্ষা করা হয় এক লাখ ৯৪ হাজার ৪৭৭ জনের। এতে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয় ২৯ হাজার ২৯০ জনের। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৫৬ জন, শতকরা শনাক্ত ১৫ শতাংশ। আর সুস্থ হয়েছেন চার হাজার ৫৭৮ জন।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমানে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কেন্দ্রগুলো হলো ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট বা বিভাগীয় শহরগুলো। কিন্তু ঈদ ও পশুর হাটকে কেন্দ্র করে গ্রাম থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ পশু নিয়ে শহরে এসেছেন। তারা শহর থেকে গ্রামে ফিরে যাবেন। অন্যদিকে নগরীর একটি বিশাল সংখ্যক মানুষ শেকড়ের টানে দেশে বিভিন্ন প্রান্তে ফিরে যাচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে বড় বড় শহরগুলো থেকে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়বে।’

তিনি বলেন, ‘করোনার সিভিয়ারিটি কমলেও বিশ্বের কোথাও করোনার টিকা দিয়ে সংক্রমণ ঠেকানো যাচ্ছে না। জটিল পরিস্থিতি এড়াতে ভূমিকা রাখতে পারে ভ্যাকসিন। কিন্তু করোনা ভাইরাস নির্মূলের ঔষধ এখনো আবিস্কার হয়নি। তাই একমাত্র মাস্ক পড়ে এটি প্রতিরোধ করা সম্ভব। মাস্ক পড়লে একদিকে নিজে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি কমে অন্য মানুষও নিরাপদ থাকে।’

কোভিড ১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. সহীদুল্লাহ বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের সিভিয়ারিটি কম কিন্তু সংখ্যা যদি বাড়ে তখন একটা অংশও সিরিয়াস হয়- শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ হয়, নিউমোনিয়া হয় তখন তো হাসপাতালে ভর্তি হওয়া লাগতে পারে। তাই স্বাস্থ্যবিধির ক্ষেত্রে একদিকে কঠোর হতে হবে অন্যদিকে চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রস্তুতি নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘পৃথিবী থেকে করোনা ভাইরাস নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি উঠিয়ে নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। অর্থনৈতিক অবস্থা সচল রাখতে লকডাউন উঠিয়ে নেওয়া হয়েছিলো। তখন কথা ছিল আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবো। সেটি কিন্তু আর হয়নি।’