উপজেলা স্বাস্থ হাসপাতালের উপর আস্থা হারাচ্ছেন জনগন

জনবল সংকট, দুর্গন্ধময় পরিবেশ, অব্যবস্থাপনা, ডাক্তারদের অপেশাদার আচরণ ও বিশেষজ্ঞ ডাক্তার না থাকার কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আস্থা নেই রোগীদের। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ ও নোংরা টয়লেটের দুর্গন্ধে অনেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতেই চান না। এক শ্রেণীর চিকিত্সকরাও সরকারি হাসপাতালের পরিবর্তে তাদের প্রাইভেট চেম্বারেই রোগী দেখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। চট্টগ্রাম, মাগুরা, ফেনী, রাজশাহী, নেত্রকোনা, খুলনা, জয়পুরহাট, নওগাঁ ও বাগেরহাটের নয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিত্র এমনই।

সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার উর্ধমুখী হলেও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা চিকিৎসা সেবার মান বাড়েনি। চিকিৎসা সক্ষমতা, আইসিইউসহ গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ ব্যবস্থা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হয়নি। এক্সরে মেশিন চালানোর অপারেটর নেই। নমুনা সংগ্রহ এবং প্রাথমিক চিকিৎসার সীমাবদ্ধতায় রাঙ্গুনিয়ায় চলছে করোনা মোকাবিলার প্রয়াস।

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন চিকিৎসা নেওয়া রোগীদের ৮০ ভাগ রোগীরই করোনা উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। চিকিৎসক ও জনবল সংকট থাকায় ডাক্তারদের কেউই কোয়ারেন্টাইন মানতে পারছেন না।

দাগনভূঞা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের ভিড়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে ডাক্তারদের। অক্সিজেন সংকট চরম পর্যায়ে হওয়ায় রোগীদের প্রতিদিনই বিপদগ্রস্ত হতে হচ্ছে। ডাক্তার নার্স তৃতীয়, চতুর্থ শ্রেণী কর্মচারী ও রেডিওলজিস্ট পদ শূন্য থাকায় চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে।

বাগেরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্যাথলজির ২ টি পদ ৪/৫ বছর যাবৎ শূন্য। এক্সরে বিভাগ বন্ধ। ইউপিআই টেকনিশিয়ান দিপক কুমার ও সিএইচসিপি ফারুক হোসেনকে করোনা ইউনিট সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামাল হোসেন মুফতি জানান, কক্ষ সংকটের কারণে পৃথক ইউনিট করার সুযোগ নেই।

চারঘাট (রাজশাহী) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক বছর ধরে কার্ডিওলজি, মেডিসিন, অর্থোপেডিক্স, সার্জারি, ইএনটি, অপথামোলজি বিভাগে ডাক্তার নেই। এনেসথেশিয়া ও গাইনি বিভাগে ডাক্তার না থাকায় জরুরী প্রসূতিসেবা বন্ধ রয়েছে। টেকনেশিয়ান ও অপারেটরের অভাবে পড়ে আছে এক্ররে, ইসিজি ও সনোরোজিষ্ট মেশিন।

চিতলমারী (বাগেরহাট) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রথম শ্রেণীর চিকিৎসকের পদ রয়েছে ২৭ টি। কিন্তু কর্মরত আছেন ১৪ জন। এছাড়া দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীতে পদ রয়েছে ১ শ’ ৮টি। সেখানে শূন্য রয়েছে ২৬ টি। মেডিকেল টেকনোলজিস্ট পদটি ৫ বছর যাবৎ শূন্য রয়েছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরীক্ষার জন্য ২টি এক্সরে মেশিন অকেজো রয়েছে। নারী ও শিশু বিশেষজ্ঞ না থাকার কারণে চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে রোগীদের। তাদের চিকিৎসার জন্য ছুটতে হচ্ছে বাগেরহাট, খুলনা, গোপালগঞ্জসহ নানা জায়গায়।