বিক্রির সারিতে `এক বছর’ আগের মেয়াদোত্তীর্ণ জ্বরের সিরাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক:
সাধারণত প্রতিটি ওষুধের গায়ে উৎপাদন এবং মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ স্পষ্ট ভাবে ছাপানো থাকে। এই মেয়াদ দিয়ে বোঝানো হয় যে এই দিন পর্যন্ত ওষুধের সর্বোচ্চ কার্যকারিতা থাকবে। মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ সর্বোচ্চ কার্যকরী মাত্রায় ব্যবহার না করলে লাভের বদলে বরং ক্ষতি হবে। অ্যান্টিবায়োটিক, ইনসুলিন, নাইট্রোগ্লিসারিন (হৃদরোগে আক্রান্তদের জীবন রক্ষাকারী ওষুধ), উচ্চরক্তচাপের ওষুধসমূহ মেয়াদ উত্তীর্ণের পর ব্যবহার না করা উচিত বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

তবে রাজধানীর বেশিরভাগ ফার্মেসীতে মিলছে মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানে ফার্মেসীগুলোকে প্রায় প্রত্যেকটিতেই কিছু না কিছু মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ পাওয়া যাচ্ছে।

মঙ্গলবার রাজধানীর জিগাতলা, ধানমন্ডি এলাকার কয়েকটি ফার্মেসীতে অভিযান চালায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

‘নিলু ফার্মেসী’ নামের একটি ওষুধের দোকানে বিভিন্ন রোগের প্রায় ২০ বক্স মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ খুঁজে পায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের (ঢাকা জেলা) সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মণ্ডল। দীর্ঘ এক বছর আগে মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে এমন ওষুধও পাওয়া যায় এই অভিযানে। ‘এক্সসেল’ নামের প্যারাসিটামল সিরাপের বোতল পাওয়া যায়, যা দীর্ঘ এক বছর আগেই মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। তার পরেও বিক্রির জন্য ওষুধের তাকগুলোতেই রাখা হয়েছে এসব মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ।

অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের অভিযানে ‘নিলু ফার্মেসী’ থেকে একে একে বিভিন্ন ধরনের ১৮ থেকে ২০ বক্স মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ পাওয়া যায়। পরে মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ পাওয়ার অপরাধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ৫১ ধারায় দোষী সাবস্ত করে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তাৎক্ষণিক সেই টাকা আদায় করা হয়।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ৫১ ধারায় বলা রয়েছে:
মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য বা ওষুধ বিক্রয় বা বিক্রয়ের প্রস্তাব করলে অনূর্ধ্ব এক বছরের কারাদণ্ড বা অনাধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হতে পারে।

এছাড়া ধানমন্ডির মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসেস লি. এর ফার্মেসীতেও অভিযান চালানো হয়। সেখানেও মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ পাওয়া যায়। এই ফার্মেসীকেও অধিদপ্তরের ৫১ ধারায় দোষী সাবস্ত করে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তাৎক্ষণিক টাকা আদায় করা হয়।

সহকারি পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মন্ডল বলেন, নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে এই অভিযান অব্যহত থাকবে। কোনভাবেই মেয়াদ উত্তীর্ষ ওষুধ ফার্মেসীতে রাখতে পারবে না বা বিক্রয় করতে পারবে না। পরবর্তীতে একই ভুল করলে এসব প্রতিষ্ঠানকে আরও বড় শাস্তির আওতায় আনা হবে।

আরইউ