সয়াবিন তেলের অবৈধ কারখানায় ভোক্তা অধিকারের অভিযান

ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) অনুমোদন ছাড়া অবৈধভাবে সয়াবিন তেল মোড়কজাত এবং বাজারজাত করার অপরাধে আশিয়ান এগ্রো নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

প্রতিষ্ঠানটির নেই কোনো ট্রেড লাইসেন্স। এমনকি অবৈধভাবে বিএসটিআইয়ের ট্রেডমার্ক ব্যবহার করে তরু, দৃষ্টি, তীন, চেরী নামে সয়াবিন তেল মোড়কজাত করে ঢাকার বাহিরে বাজারজাত করছিল।

রোববার রাজধানীর ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই অবৈধ কারখানা সিলগালা করে ভোক্তা অধিদপ্তর। এছাড়া পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সকল প্রকার কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

ভোক্তা অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে স্ব-শরীরে উপস্থিত থেকে ব্যাখ্যা এবং বৈধ কাগজপত্র দেখানেরা জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

অভিযানের নেতৃত্ব দেন অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের অফিস প্রধান, সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মণ্ডল, সহকারী পরিচালক মো. হাসানুজ্জামান।

অভিযানে গিয়ে যা দেখা গেল
ব্যারেল থেকে খোলা সয়াবিন তেল একটি ট্যাংকে জমা করা হচ্ছে। সেখান থেকে পাইপ দিয়ে পানির ট্যাপের মাধ্যমে বোতলজাত করা হচ্ছে। বোতলের গায়ে ৯০০ মিলি লেখা থাকলেও দেওয়া হচ্ছে ৮০০ মিলি। এছাড়া সয়াবিন তেলের সঙ্গে মেশানো হচ্ছে পামওয়েল। আশিয়ান এগ্রো নামের এই প্রতিষ্ঠান থেকে তরু, দৃষ্টি, তীন, চেরীসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সয়াবিন তেল বাজারজাত করা হয়। কারখানায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বিভিন্ন পরিমাপের খালি বোতল, এছাড়া বাহারি নামের লেবেল।

ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযানের খবরে আগেই পালিয়ে যায় কারখানাটির মালিক। পরে মালিক পক্ষের একজন প্রতিনিধি এলে তার সম্মুখে জরিমানার শুনানি করেন ভোক্তা কর্মকর্তারা।

জানা যায়, তিনজন মিলে এই অবৈধ কারখানা তৈরি করেছেন। এই কারখানা থেকে সিলেট, সুনামগঞ্জ এবং মৌলভীবাজার এলাকায় তেল সরবরাহ করা হতো। এছাড়া ব্যবসায়ীদের চাহিদা মতো বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নামে সয়াবিন তেল মোড়কজাত করা হতো।

অভিযানের বিষয়ে যা বললেন ভোক্তা কর্মকর্তারা
আব্দুল জব্বার মন্ডল বলেন, আমাদের কাছে আগে থেকে তথ্য ছিল, এই কারখানায় অবৈধ প্রক্রিয়ায় সয়াবিন এবং পামওয়েল তেল বোতলজাত করে বাজারজাত করা হচ্ছিল। পরে এখানে এসে দেখলাম, চারটি নাম দিয়ে তেল বোতলজাত করে সিলেটসহ বিভিন্ন এলাকায় বাজারজাত করছিল। এই কোম্পানির বিএসটিআইয়ের কোনো অনুমোদন নেই। অথচ বিএসটিআয়ের ট্রেডমার্ক ব্যবহার করছে। এছাড়া এখানে একটি ল্যাব থাকার কথা, তাও নেই। অপরিচ্ছন্ন-নোংরা পরিবেশে তেল বোতলজাত করা হচ্ছে। এ সকল অপরাধে ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ এর দুই ধারায় প্রতিষ্ঠানটিকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এবং সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।