কওমি মাদ্রাসায় রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ: জানেন না সংশ্লিষ্টরা

ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক:

কওমি মাদ্রাসাকে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে আনার আলোচনা উঠেছে। সম্প্রতি জাতীয় সংসদে সরকারের দায়িত্বশীলরা জানিয়েছেন, দেশের সবগুলো মাদ্রাসাকে এক বোর্ডের অধীনে আনার বিষয়টি পর্যালোচনাধীন। তবে, যাদের ঘিরে এই পর্যালোচনা, তারাই এ বিষয়ে অন্ধকারে রয়েছেন বলে জানাগেছে।

জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘কওমি মাদ্রাসাগুলোকে একটি বোর্ডের মাধ্যমে পরিচালনা করা প্রয়োজন। কওমি মাদ্রাসাসহ ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য যুগোপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা কার্যকর করা এবং সরকারি নিবন্ধনের আওতায় আনার প্রয়োজন রয়েছে। এ লক্ষ্যে সমন্বিত একটি নীতিমালা এবং কওমি মাদ্রাসা সংক্রান্ত বর্তমানে আলাদাভাবে পরিচালিত ছয়টি বোর্ডকে সমন্বিত করে একটি কমিটি গঠনের বিষয়টি সরকারের পর্যালোচনাধীন।’

শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্য ধরে বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে কথা বলেন কওমি মাদ্রাসার কয়েকজন দায়িত্বশীল আলেম। তারা বলেন, সরকার কওমি মাদ্রাসাকে স্বীকৃতি দিয়েছে চার বছরেরও বেশি হলো। এখন নতুন করে আবার নিয়ন্ত্রণের প্রশ্ন কেন? উপরন্তু এক বোর্ডের অধীনেই দেশের সব মাদ্রাসা পরীক্ষা দিচ্ছে দাওরায়ে হাদিস স্তরে। সেক্ষেত্রে নতুন কোনও উদ্যোগ নেওয়া হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে (‘আল-হাইআতুল উলয়া লি-জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশ) জানানো রাষ্ট্রীয় নীতির মধ্যে পড়ে।

আলেমরা জানান, ‘আল-হাইআতুল উলয়া লি-জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’-তে ছয়টি বোর্ড সক্রিয়। এরমধ্যে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বা বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড সবচেয়ে বড়। বাকিগুলো আঞ্চলিক প্রধান বোর্ড।

জানতে চাইলে আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া বাংলাদেশের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে কোনও কিছুই জানানো হয়নি। ফলে এ বিষয়ে বলার মতো কিছু নেই। যদি কখনও প্রস্তাব আসে, তখন আমাদের ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হবে। এই মুহূর্তে আর বলার কিছু নেই।

এ বিষয়ে সরকারি স্বীকৃত কওমি মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষ ‘আল-হাইআতুল উলয়া লি-জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’-এর সদস্য মাওলানা মুসলেহ উদ্দিন রাজু বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতি দিয়েছেন। আমাদের মাদ্রাসাগুলো আগে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে ছিল না। এখন চিত্র পাল্টেছে। ইতোমধ্যে আইনের মাধ্যমে বোর্ড হয়েছে। একটি বোর্ডের অধীনে দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষা দিচ্ছে শিক্ষার্থীরা। হঠাৎ করে আবার নিয়ন্ত্রণের আলোচনা কেন?’