কক্সবাজারে ১০ হাজার একর জমির লবণ উৎপাদন বন্ধ

ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে বৃষ্টিতে কক্সবাজারে বন্ধ হয়ে গেছে অন্তত ১০ হাজার একর জমির লবণ উৎপাদন। সোমবার (৯ মে) সকাল থেকে কক্সবাজার সদর, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়া ও চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে হালকা ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে অনেক লবণ মাঠ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বিষয়টি জানিয়ে বিসিকের কক্সবাজারের উপমহাব্যবস্থাপক জাফর ইকবাল ভূইয়া বলেন, তবে কী পরিমাণ মাঠ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা জরিপের মাধ্যমে বলা যাবে। এখনো জরিপকাজ চলছে বলে জানান তিনি।

স্থানীয় সূত্রমতে, মহেশখালীতে পাঁচ হাজার একর, কক্সবাজার সদর উপজেলায় চার হাজার এবং পেকুয়া ও চকরিয়ায় প্রায় এক হাজার একর লবণ মাঠ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মাঠ লবণ উৎপাদনের উপযোগী করতে সময় লাগবে ৮ থেকে ১০ দিন।

এদিকে বৃষ্টিতে কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নের নয়াপাড়ার কয়েক শ একর জমির লবণ উৎপাদন বন্ধ গেছে।

স্থানীয় লবণচাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, তার উৎপাদিত প্রায় ২৬ মণ লবণ মাঠে রাখা ছিল। সকালের বৃষ্টিতে সব লবণ গলে গেছে। কুতুবজোমের লবণচাষি আবু বক্কর বলেন, বৃষ্টির পানি সরিয়ে মাঠ লবণ উৎপাদনের উপযোগী করে তুলতে সময় লাগবে অন্তত আট দিন।
কালারমারছড়া ইউনিয়নের চালিয়াতলি এলাকার লবণচাষি শাহাব উদ্দিন বলেন, প্রায় তিন মাস ধরে পাঁচ একর জমিতে লবণ চাষ করছি। গত রোববার পর্যন্ত প্রায় এক হাজার মণ লবণ উৎপাদিত হয়েছে। আর মাঠে উত্তোলনের উপযোগী ছিল আরও এক শ মণ লবণ। কিন্তু সকালে বৃষ্টিতে সব লবণ গলে গেছে।

হোয়ানক পানিরছড়ার লবণচাষি জয়নাল আবেদীন জানান, চলতি বছরে ১০ একর জমিতে লবণ মাঠ করেছেন। কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। লবণচাষিদের সভা-সমাবেশের কারণে লবণের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় পুরোদমে লবণ উৎপাদন শুরু করেন। কিন্তু হঠাৎ এ বৃষ্টির কারণে প্রায় পাঁচ লাখ টাকারও বেশ ক্ষতি হয়েছে তার।

বাংলাদেশ লবণ মিলস মালিক সমিতির সভাপতি নুরুল কবির বলেন, এ বছর লবণ উৎপাদন একদম শেষের দিকে। যদি বৃষ্টি কয়েক দিন হয়, তাহলে চাষিরা একবারে মাঠ ছেড়ে চলে আসবেন। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে কিছু চাষির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে এখনো জরিপ চলমান রয়েছে।

বাংলাদেশ লবণচাষি সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি আনোয়ার পাশা চৌধুরী বলেন, টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে অন্তত পাঁচ হাজার একর জমিতে লবণ উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে।