ছোট হয়ে আসছে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির বাজার

মোট বিক্রি হওয়া গাড়ির ৮০ শতাংশই পুরনো। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির বাজারটি ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে। বিপরীতে বাড়ছে নতুন গাড়ি বিক্রি। গত তিন বছরের ব্যবধানে দেশে পুরনো গাড়ি বিক্রি প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।

‘অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা-২০২০’ নামে একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করেছে সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয়। এতে পর্যায়ক্রমে দেশে পুরনো গাড়ি আমদানি বন্ধের কথা বলা হয়েছে। তবে নীতিমালটি চূড়ান্ত হওয়ার আগেই ছোট হতে শুরু করেছে পুরনো গাড়ির বাজার।

সরকারের বৈষম্যমূলক রাজস্ব নীতির কারণে গাড়ি আমদানি কমতে শুরু করেছে। আর অটোমোবাইল নীতিমালার মাধ্যমে পুরনো গাড়ির বাজারটিকে পুরোপুরি ধ্বংসের পাঁয়তারা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুরনো গাড়ির আমদানিকারকরা।

অন্যদিকে খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণী এখন পুরনো গাড়ির চেয়ে নতুন গাড়ি কেনার দিকে বেশি ঝুঁকছেন, যার একটা প্রভাব দেখা যাচ্ছে পুরনো গাড়ি আমদানি ও বিক্রির পরিসংখ্যানে।

দেশে পর্যায়ক্রমে পুরনো গাড়ি আমদানি ও বিক্রি কমছে, এ ব্যপারে বারভিডার সভাপতি আব্দুল হক বলেন, এর জন্য দায়ী সরকারের বৈষম্যমূলক শুল্ক নীতি। পুরনো গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে ন্যূনতম শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে ১২৮ শতাংশ। গাড়ির সিসি ভেদে এ হার বাড়তে থাকে। এ কারণে আমদানি করা পুরনো গাড়ির দাম ক্রমাগত বেড়ে যাচ্ছে। ফলে দামের দিক দিয়ে নতুন গাড়ির সঙ্গে পুরনো গাড়ি প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে বলে মনে করেন তিনি।

সরকার ৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে আঞ্চলিক অটোমোবাইল শিল্প উৎপাদনের কেন্দ্রে পরিণত করতে চায়। এজন্য তৈরি করা হচ্ছে ‘অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা’। এতে পর্যায়ক্রমে পুরনো গাড়ি (রিকন্ডিশন্ড কার) আমদানি বন্ধ করে স্থানীয় উৎপাদনকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। তবে নীতিমালাটি চূড়ান্ত হওয়ার আগেই দেশে পুরনো গাড়ির বাজারটি ছোট হয়ে আসছে।

পুরনো গাড়ি আমদানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকলস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) তথ্য বলছে, ২০২০ সালে পুরনো গাড়ি আমদানি হয়েছে ১২ হাজারের কম। দু-তিন বছর আগেও বছরে এর প্রায় দ্বিগুণ পুরনো গাড়ি আমদানি হতো বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।

পুরনো গাড়ি আমদানি বন্ধের এ পরিকল্পনাটি বাস্তবসম্মত নয় বলে জানিয়েছেন বারভিডার সভাপতি। তিনি বলেন, আমরা দেশে গাড়ি উৎপাদনের বিরোধিতা করছি না। কিন্তু এজন্য পুরনো গাড়ি আমদানি বন্ধ করে দেয়ার পরিকল্পনাটি কোনোভাবেই যুক্তিসংগত নয়। এতে পুরনো গাড়ির ব্যবসায়ীরা একদিকে যেমন ক্ষতির মুখে পড়বেন, তেমনি দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণী যারা পুরনো গাড়ির ক্রেতা, তারাও বঞ্চিত হবেন।