ধর্মঘটের তৃতীয় দিনেও চট্টগ্রাম বন্দরের ডেলিভারি কার্যক্রম বন্ধ

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে চলমান ধর্মঘটে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে তৃতীয় দিনের মতো প্রায় বন্ধ রয়েছে ডেলিভারি কার্যক্রম। হাতেগোনা কয়েকটি ছাড়া রোববারও (৭ নভেম্বর) বন্দরে পণ্য ডেলিভারির কোনো গাড়ি প্রবেশ কিংবা বের হয়নি। এছাড়া ধর্মঘটের প্রথমদিকে বন্দর থেকে বিভিন্ন ডিপোতে আমদানি-রপ্তানি পণ্য আনা-নেওয়া হলেও বর্তমানে শ্রমিকদের বাধায় সেটিও প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।

গত বুধবার (৩ নভেম্বর) মধ্যরাত থেকে ডিজেলের মূল্য লিটারপ্রতি ১৫ টাকা বৃদ্ধি করেছে সরকার। এ নিয়ে পরদিন বৃহস্পতিবার পরিবহন খাতের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে সারাদেশে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। জ্বালানি তেলের বর্ধিত দাম না কমানো পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে বলেও জানান তারা।

এদিকে ধর্মঘটের কারণে দেশের প্রায় ৯২ ভাগ আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রক চট্টগ্রাম বন্দরে শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে বন্ধ রয়েছে ডেলিভারি কার্যক্রম। বন্দরে ইয়ার্ডে বর্তমানে কনটেইনার জমা রয়েছে ৩৮ হাজার টিইইউসেরও (২০ ফুট দৈর্ঘ্যের একক) বেশি। দ্রুত এ সমস্যার সমাধান না হলে সংকটের আশঙ্কা করছেন বন্দর সংশ্লিষ্টরা।

বন্দর সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘ধর্মঘটের তৃতীয় দিনে হাতেগোনা কিছু পণ্য ডেলিভারি হয়েছে। এমনিতেই রোববার ডেলিভারি হওয়ার কথা ছিল মাত্র ৭০০ থেকে ৮০০ কনটেইনার। কিন্তু শ্রমিকরা বন্দরে কোনো গাড়ি প্রবেশ কিংবা বের করতে না দেওয়ায় সেগুলোও ডেলিভারি দেওয়া সম্ভব হয়নি। এছাড়া ডিপো থেকে বন্দরে তেমন একটা মালামাল আনা-নেওয়া হচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বন্দরে আরও ১১ হাজার টিইইউস কনটেইনার রাখা যাবে। তবে দ্রুত ধর্মঘট প্রত্যাহার না হলে জট তৈরি হতে পারে।’

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পণ্যপরিবহন বন্ধ থাকার কারণে দেশের আমদানি-রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে। বন্দরের জাহাজের অপেক্ষমাণ সময় বাড়ছে। এতে করে পরিবহন ব্যয়ও বাড়ছে। সবমিলিয়ে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। যার প্রভাব পড়বে জনগণের ওপর।’

চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (সিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘হঠাৎ করে জ্বালানি তেলের দাম বাড়াটাও উচিৎ হয়নি, আবার ধর্মঘট আহ্বান করাটাও উচিৎ হয়নি। ব্যবসায়ী এবং জনগণের স্বার্থে দ্রুত এ ধর্মঘট প্রত্যাহার করা উচিৎ।’

বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোস অ্যাসোসিয়েশন (বিকডা) মহাসচিব রুহুল আমিন শিকদার বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ে বন্দর থেকে বিভিন্ন ডিপোতে দৈনিক পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার কনটেইনার আনা-নেওয়া হয়। ধর্মঘটের কারণে গত দুদিন ধরে সেটি বন্ধ রয়েছে। ডিপোতে বর্তমানে রপ্তানি পণ্যের কনটেইনার রয়েছে ৯ হাজার ৭০০, আমদানি পণ্যের রয়েছে ৮ হাজার এবং খালি কনটেইনার রয়েছে ৩৪ হাজার।’