বাস ভাড়া বৃদ্ধির বৈঠক বুধবার, লঞ্চের পায়তারা

ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক:
করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন রোধে সরকারি বিধিনিষেধে গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে হবে। এরই মধ্যে ট্রেনে ভাড়া না বাড়িয়ে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।  তবে বাস এবং লঞ্চে যাত্রী পরিবহনে কেমন ভাড়া নেওয়া হবে তার সিদ্ধান্ত হয়নি।
স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে বাসে যাত্রী পরিবহনে মালিকদের নিয়ে বুধবার বৈঠকে বসতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। এ বৈঠকে বাসের ভাড়া বৃদ্ধি, চালক ও সহকারীদের সনদ বাধ্যতামূলক করার বিষয়টি তুলবেন মালিকরা। বুধবার দুপুর আড়াইটায় বনানীতে বিআরটিএ কার্যালয়ে এই বৈঠক হবে।

সোমবার (১০ জানুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে গণপরিবহনের ক্ষেত্রে বলা হয়, ট্রেন, বাস এবং লঞ্চে সক্ষমতার অর্ধেক সংখ্যক যাত্রী নেওয়া যাবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কার্যকারিতার তারিখসহ সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারি করবে। সর্বপ্রকার যানের চালক সহকারীদের আবশ্যিকভাবে কোভিড-১৯ টিকা সনদধারী হতে হবে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি খন্দকার এনায়েতুল্লাহ বলেন, প্রজ্ঞাপনে ভাড়ার বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। কিন্তু একই জনবল এবং বাস দিয়ে ৫০ ভাগ যাত্রী বহন করব, বাড়তি ভাড়া নিতে পারব না, এতে আমাদের লস হবে। মালিকরা তো ভর্তুকি দিয়ে গাড়ি চালাবেন না।

তিনি বলেন, অফিস-আদালত, কল-কারখানা সব শতভাগ চালু রেখে কীভাবে বাস অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চালু রাখতে বলে। এতে হয়তো দূরপাল্লায় যাত্রীদের সমস্যা হবে না, কিন্তু নগর পরিবহনে অফিস সময়ে তো যাত্রীরা চলাচল করতে পারবেন না।

ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব করবেন কিনা—প্রশ্নে খন্দকার এনায়েতুল্লাহ বলেন, গতবার বিধিনিষেধের সময় ৬০ শতাংশ বেশি ভাড়া ছিল, যেহেতু কিছুদিন আগে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে ভাড়া বেড়েছে। তাই ওখান (৬০ শতাংশ) থেকে কিছু কমাক। লাভ আমরা নাই করলাম।

গত ৪ নভেম্বর ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে বিদ্যু, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। এরপর ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে বাস-ট্রাক-লঞ্চ মালিকরা ধর্মঘট করে ভাড়া বৃদ্ধি করে নেয়। আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার রুটে চলাচলকারী বাস ও মিনিবাসের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটার সর্বোচ্চ ভাড়া ১ টাকা ৪২ পয়সার স্থলে ১ টাকা ৮০ পয়সা। ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচলকারী বাস ও মিনিবাসের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটার ভাড়া যথাক্রমে ১ টাকা ৭০ পয়সার স্থলে ২ টাকা ১৫ পয়সা ও ১ টাকা ৬০ পয়সার স্থলে ২ টাকা ৫ পয়সা করা হয়। বাস ও মিনিবাসের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ভাড়া যথাক্রমে ৭ টাকার স্থলে ১০ টাকা ও ৫ টাকার স্থলে ৮ টাকা করা হয়।

ঢাকা টান্সপোর্ট কোঅর্ডিনেশন অথরিটির (ডিটিসিএ) আওতাধীন জেলার (নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ ও ঢাকা জেলা) অভ্যন্তরে চলাচলকারী বাস ও মিনিবাস উভয় ক্ষেত্রে ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ১ টাকা ৬০ পয়সার স্থলে ২ টাকা ৫ পয়সা করা হয়েছে। এই ভাড়া বৃদ্ধি গ্যাস, অকটেন ও পেট্রোল চালিত যানবাহনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

আর লঞ্চের ক্ষেত্রে প্রথম ১০০ কিলোমিটার দূরত্বের জন্য প্রতি কিলোমিটারে জনপ্রতি যাত্রী ভাড়া ৬০ পয়সা বৃদ্ধি করে ২ টাকা ৩০ পয়সা এবং প্রথম ১০০ কিলোমিটারের অধিক দূরত্বের জন্য প্রতি কিলোমিটারে জনপ্রতি যাত্রী ভাড়া ৬০ পয়সা বৃদ্ধি করে ২ টাকা নির্ধারণ করা হয়। জনপ্রতি সর্বনিম্ন ভাড়া ২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

অন্যদিকে, লঞ্চ কীভাবে চলবে সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং লঞ্চ মালিক সমিতির সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে তারা দরাদরি করছেন। এ বিষয়ে এক-দু’দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত হবে।