এক মাসের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: ঈদের আগে বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে। এখন সে পেঁয়াজ ৭০ টাকায় ঠেকেছে। বলতে গেলে এ দাম প্রায় দ্বিগুণ।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যও বলছে একই কথা। সংস্থাটির তথ্যমতে, বর্তমানে দেশের বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকায়। এক মাস আগে বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩০-৪০ টাকায়। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রায় ৯৩ শতাংশ।

অন্যদিকে সংস্থাটি বলছে, গত বছর একই সময়ে বাজারে পেঁয়াজের দাম ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকার মধ্যে। অর্থাৎ বছর ব্যবধানে এ বৃদ্ধি ৫৯ শতাংশ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উৎপাদন মৌসুমে কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে গত মার্চের মাঝামাঝি থেকে বন্ধ পেঁয়াজ আমদানি। এরপর কিছুদিন দাম নিয়ন্ত্রণে থাকলেও শেষ এক মাস পেঁয়াজের দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে।

এ অবস্থায় আবারও পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়ার কথা ভাবছে সরকার। রোববার (১৪মে) দুপুরে সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি বিষয়ে করণীয় নির্ধারণসংক্রান্ত সভায় কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার এ আভাস দেন।

তিনি বলেন, উৎপাদন ও মজুত বিবেচনায় দেশে এ মুহূর্তে পেঁয়াজের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। অথচ বাজারে দাম কিছুটা বেশি। কৃষি মন্ত্রণালয় বাজার পর্যবেক্ষণ করছে। দাম বাড়তে থাকলে শিগগির পেঁয়াজ আমদানির বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর ২ লাখ ৪১ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করা হয়েছে। পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ৩৪ লাখ টনের বেশি। বর্তমানে মজুত আছে ১৮ লাখ ৩০ হাজার টন। কিন্তু উপযুক্ত সংরক্ষণের অভাবে বা প্রতিকূল পরিবেশের কারণে ৩০-৩৫ শতাংশ পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়।

অন্যদিকে দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২৬ থেকে ২৮ লাখ টন। সে হিসেবে পেঁয়াজ সংকট হওয়ার কথা নয়। কারণ মৌসুম শুরুর আগে চলতি অর্থবছরে পেঁয়াজ আমদানি উন্মুক্ত ছিল। দেশে এ পর্যন্ত কয়েক লাখ টন পেঁয়াজ এসেছে।

তথ্য বলছে, দেশে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৮ লাখ ৬৩ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে করা হয় ১০ লাখ ৭ হাজার টন। ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ অর্থবছরে তা কমে দাঁড়ায় ৫ লাখ ৫৩ হাজার টন ও ৬ লাখ ৬৫ হাজার টনে। সে হিসাবে চলতি অর্থবছরের পেঁয়াজ আমদানি উন্মুক্ত থাকা প্রথম নয় মাসে আমদানি প্রায় চার লাখ টন ছেড়ে যাওয়ার কথা।