‘শুধু সিন্ডিকেট নয়, পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধিতে লাখ লাখ মানুষ জড়িত’

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেছেন, চলতি বছরে পেঁয়াজ চাষাবাদে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। কেজিপ্রতি উৎপাদন খরচ গতবছর ছিল ২২ টাকা, এবার তা বেড়ে হয়েছে ২৮ টাকা। রোজা পর্যন্ত পেঁয়াজের দাম ঠিক ছিল। কেজিপ্রতি ৫০ টাকা ছিল যা ক্রয়ক্ষমতার মধ্যেই ধরা যায়। সাধারণত পেঁয়াজ ওঠে মার্চ-এপ্রিল মাসে। কিন্তু এক মাসের মধ্যে এমন দাম বৃদ্ধি অস্বাভাবিক। অনেকেই বলেন, করপোরেট লোকজন সিন্ডিকেট করছে। কিন্তু এর সঙ্গে জড়িত লাখ লাখ লোক। পাবনা-ফরিদপুর অঞ্চলে হাজার হাজার কৃষক পেঁয়াজ বিক্রি করছে। যখনই খবর পাচ্ছে ভারতে বৃষ্টি হয়েছে, তেমনি দাম বেড়ে যাচ্ছে। যখন ভারত আমদানি বন্ধ করছে তখন দাম বেড়ে যাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ মে) সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার সোনামসজিদ স্থলবন্দর পরিদর্শন শেষে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এসময় মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান সোনামসজিদ স্থলবন্দরের আমদানিকারক-রপ্তানিকারক, সিঅ্যান্ডএফ ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন।

অতিরিক্ত সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান আরও বলেন, হঠাৎ করেই পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির এই আচরণ কাম্য নয়। অথচ দাম বৃদ্ধির পরপর ভারত থেকে কিছু পেঁয়াজ আমদানি শুরু করলেই দেশে পেঁয়াজের দাম কমে যায়। এ বিষয়ে খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত আসছে। প্রযুক্তির কল্যাণে ফোনে ও এসএমএসে ভারতে বৃষ্টি ও আমদানি বন্ধের খবরে দ্রুত দাম বৃদ্ধি হয়ে যায়।

বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ক্রেতাদেরকেও সর্তক হতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, আমরা যদি ইফতারে বেগুনি না খাই, তাহলে আমাদের ইফতারি হবে না তা তো না। তিন হাজার টাকার একটি কাপড় কিনি না কিন্তু যেই পণ্যের গায়ে ১০ হাজার টাকা মূল্য লেখা থাকে সেটি ঠিকই ক্রয় করি। আমাদের পক্ষ থেকে আমরা কাজ করছি। তবে এর আগে সকলের সচেতনতা প্রয়োজন। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বাজার মনিটরিংয়ে কাজ করছে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বিভিন্ন কার্যালয়ে গতবছর মোট ৯ হাজার অভিযোগ পড়েছিল। কিন্তু চলতি বছর তা বেড়ে প্রায় ৩৩ হাজার হয়েছে। ভোক্তার এতোগুলো অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে আরও জনবল প্রয়োজন। সারাদেশে মাত্র ৮৮ জন কর্মকর্তা রয়েছে। যারা হেডকোয়ার্টার, বিভাগীয় কার্যালয় ও জেলা কার্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন।

মতবিনিময় সভায় সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে বিভিন্ন পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে নানারকম সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হায়াত, শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চৌধুরী জোবায়ের আহমেদ, সোনামসজিদ স্থলবন্দর পানামা পোর্ট লিংক লিমিটের ম্যানেজার মাইনুল ইসলামসহ আমদানি-রপ্তানিকারক, ব্যবসায়ী স্থলবন্দর সংশ্লিষ্টরা।