ক্যান্সাররোধী ভুট্টা চাষ, কাজ করছে বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

দেশে নতুন জাতের ভুট্টার চাষে গবেষণা কার্যক্রম চালাচ্ছে বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী। দলটির মতে তাদের উদ্ভাবিত এ জাতটি একদিকে যেমন পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ তেমনি ভূমিকা রাখবে ক্যান্সার থেকে সুরক্ষা দেবে।

গবেষণা কার্যক্রমের নেতৃত্ব দেওয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিট তত্ত্ব বিভাগের বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. রুহুল আমিন জানান, নতুন একটি ভুট্টার জাত নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম চালাচ্ছি। যেটিতে রয়েছে নানবিধ পুষ্টিগুণ। এছাড়া এটির মধ্যে থাকা আঠারোটি অ্যামাইনো অ্যাসিড রান্নার মাধ্যেমে ফেরুকিল অ্যাসিড এর মাত্রা বৃদ্ধি ঘটে , যা অ্যান্টি ক্যান্সার হিসাবে কাজ করে।

নতুন এ জাতে অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটির প্রতি১০০ গ্রাম মিষ্টি ভুট্টায় পানি ৭৫ দশমিক ৯৬ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ১৯.২ গ্রাম, সুগার ৩.২গ্রাম, আঁশ ২.৭গ্রাম, আমিষ ৩.২ গ্রাম, চর্বি ১.৮ গ্রাম, ভিটামিন সি ৬.৮মিলিগ্রাম এবং ভাইটামিন এ , বি ১, বি ৩ বিদ্যমান রয়েছে। এছাড়া মিষ্টি ভুট্টার আইরন, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ প্রভূতি খনিজ উপাদান রয়েছে।

বাংলাদেশের আবহাওয়া উপযোগী জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা এবছর ফিল্ড ট্রায়াল দিয়েছি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে, টাঙ্গাইলে কৃষকের ক্ষেতে, বগুড়ার মসলা গবেষণা কেন্দ্র এবং দিনাজপুরের তুলা উন্নয়ন কেন্দ্রে। এতে বেশ ভালো ফলন হয়েছে।

ড. রুহুল আমিন বলেন, উৎপাদিত সকল ভুট্টা গো খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু নতুন জাত টি জাপান, কোরিয়া, চীন, ফিলিপাইন প্রভৃতি দেশে মিষ্টি ভুট্টা হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। কোনরকম প্রক্রিয়া ছাড়া এটি কাচাবাসের দ করে চিবিয়ে খাওয়া যায়। এছাড়া সালাদ ও সবজি হিসেবে অত্যন্ত সমাদৃত।

এটি বিদেশী জাত হলেও দেশের বিভিন্ন অভিজাত হোটেলগুলোতে সালাদ হিসেবে বেশ প্রচলন রয়েছে। এটি দেশে উৎপাদন করা গেলে একদিকে যেমন আমদানি নির্ভরতা কমবে তেমনি দেশীয় বাজারে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। উল্লেখ্য, নতুন এ জাতের ভুট্টা নিয়ে গবেষণা কাজ ২০১৪ সাল থেকে শুরু হয়েছে। যা কোরিয়ার একটি মিষ্টি জাতের ভুট্টার মডিফাইড ক্রপ। বর্তমানে টব থেকে কয়েক ধাপে বীজের পরিমাণ বৃদ্ধি করে ফিল্ড ট্রায়াল চলছে। যা পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এবং কম সময়ে ফলন উপযোগী।