বাড়তি মূল্য নিত্যপণ্যের পকেট ফাঁকা জনগণের

নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। রমজান শুরুর বাকি দুই সপ্তাহ । এদিকে বাজারে নিত্যপণ্যের অব্যাহত দাম বৃদ্ধিতে সংসারের আয়-ব্যয়ের খাতা মেলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ। তাদের আয় বাড়ছে না, কিন্তু পকেট কাটছে জিনিসপত্রের চড়া দাম। বাজারে মাছ-মাংস, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যের বাড়তি দাম নিয়ন্ত্রণ করার ব্যাপারে এখনো কড়া নজরদারি দেখা যাচ্ছে না।

প্রতিদিনের সংবাদের এক তথ্য মতে: নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যের লাগামহীন বাজারদরে নাকাল রাজধানীর নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ বলছেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের লাগামহীন দরবৃদ্ধির কারণে তারা সংসারের আয়-ব্যয়ের হিসাব মেলাতে হিমশিম খাচ্ছেন। তারা বলছেন, বাজারে নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকা ও সামগ্রিকভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতার মাশুল তাদের টানতে হচ্ছে। হিসাব করে সংসার চালানো তাদের জন্য অনেক কষ্টকর হয়ে গেছে।

গত সপ্তাহের চেয়ে বাজারে মুরগির দাম বেশ বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়। শান্তিনগর বাজারের মনির এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মনির হোসেন বলেন, মুরগির দাম এখন চড়া। শীতের সময় থেকেই প্রায় সব ধরনের মুরগির দাম বেড়ে চলেছে।

মুরগির দাম বাড়ার কারণ সম্পর্কে একই বাজারের ভাই ভাই ব্রয়লার হাউসের বিক্রেতা ইমরান হোসেন বলেন, ‘শীত মৌসুমে খামারে নতুন করে মুরগি উৎপাদন ও লালন-পালন কম হয়েছে, যে কারণে এখন শীতকাল চলে যাওয়ার পর পর এর প্রভাব এসে পড়েছে বাজারে। এখন খামারে যেসব নতুন মুরগি হচ্ছে, সেগুলো বাজারে এলেই দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে।

শান্তিনগর বাজার থেকে পাঁচটি কক মুরগি কেনার পর নগরীর সিদ্ধেশ্বরীর বাসিন্দা মারজিয়া আক্তার বলেন, ‘বাসায় ছোট একটা প্রোগ্রাম আছে, যে কারণে মুরগি কেনা লাগছে। মুরগির দাম এত বেশি বেড়েছে যে হিসাব করেও মেলানো যাচ্ছিল না। পাশাপাশি অন্যান্য মাছ-মাংসসহ সব জিনিসপত্রের দামই তো বেড়েছে। এতে করে আমাদের মাসিক খরচ আরো বেড়ে গেছে।’রাজধানীর কোনো বাজারেই গরুর মাংসের কেজি ৬০০ টাকার কমে বিক্রি হচ্ছে না। আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা থেকে ৮৫০ টাকা।

মাছের দামও কিছুটা চড়া বলে জানিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। আকারভেদে কেজিপ্রতি রুই বিক্রি হচ্ছে কমপক্ষে ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, বোয়াল ৬৫০ থেকে ৭০০, কালিবাউশ দেশি ৮০০, চাষের ৪৫০, আইড় ৬০০ থেকে ৭৫০, ইলিশ ৭০০ থেকে ১ হাজার ২০০, চিংড়ি এক হাজার, কৈ ৫০০, পাবদা ও টেংরা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

মালিবাগ বাজারের মাছ বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘গত কয়েকদিনে মাছের দাম কিছুটা বেড়েছে। এর কারণ হলো, নদীতে মাছ কম ধরা পড়ছে, আর যেসব এলাকায় মাছ চাষ হয় সেখান থেকে সরবরাহও কমে গেছে।’সেগুনবাগিচা এলাকার বাসিন্দা আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘মাছ-মাংস থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যেরই দাম বেড়েছে। সংসার হিসাব করে চালানো অনেক কষ্টকর হয়ে গেল। সরকারের নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না, তাদের ব্যর্থতার কারণে সবকিছুর দাম দিন দিন বাড়ছেই। আর আমাদের মতো সাধারণ মানুষ বাজারে গিয়ে এখন অসহায়।’বাজারে সয়াবিন তেলের দাম আরেক দফায় বেড়েছে। সর্বনিম্ন প্রতি লিটার বোতল ১৩৫ টাকা এবং পাঁচ লিটার বোতল ৬৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পুষ্টি ও তীর ব্র্যান্ডের দাম একটু কম থাকলেও বাজারে রূপচাঁদা ব্র্যান্ডের তেলের দাম কিছুটা বেশি।