পেঁয়াজের ঝাঁজের সঙ্গে বেড়েছে মুরগির দাম

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: রাজধানীর বাজারগুলোতে কিছুটা কমেছে সবজির দাম। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে মুরগি ও পেঁয়াজের। অপরিবর্তিত আছে আদা, রসুন ও আলুর দাম।

শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৯০ টাকা থেকে ২০০ টাকায়, যা গত সপ্তাহেও ছিল ১৭০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায়; গত সপ্তাহে এই মুরগি ছিল ২৮০ টাকা।

দোকানি মতিউর রহমান বলেন, এ সপ্তাহে মুরগির দাম বাড়তি। কারণ সাপ্লাই কমে গেছে। সাপ্লাই কমে গেলে কারওয়ান বাজারে মুরগির দাম বাড়তে থাকে।

বর্তমানে এই বাজারে প্রতি কেজি বরবটি ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, পেঁপে ৩৫ টাকা, লতি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, উস্তা ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, করলা ৬০ টাকা, আমদানি করা গাজর ১২০ টাকা, দেশি গাজর ৭০ টাকা, বেগুন ৫০ থেকে ৭৫ টাকা, কাঁকরোল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, মূলা ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৩৫ টাকা, পটল ৩৫ টাকা, ঝিঙ্গা ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, ধুন্দুল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কচুরমুখী ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, পাকা টমেটো ৪৮০ টাকা, কাঁচা টমেটো ২৮০ টাকা, সজনে ডাটা ২০০ টাকা, শিম ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া প্রতি পিস বাঁধাকপি ৪০ টাকা, ফুলকপি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, কুমড়া ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, চালকুমড়া ৫০ টাকা, লাউ ৪৫ থেকে ৫০ টাকা ও কাঁচকলার হালি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতাদের দাবি, গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে সবজির দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা কমেছে। তবে দুই-চারটি সবজির সরবরাহ না থাকায় দাম বেশি আছে।

কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা জাকির হোসেন বলেন, যেগুলো আমাদের দেশে উৎপাদন হয় সেগুলোর দাম কমেছে। তবে টমেটোসহ যেগুলো আমদানি করতে হচ্ছে সেগুলোর দাম বাড়তি।

ইব্রাহিম শিকদার নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, কাঁচামালের দাম উঠানামা করে। যখন পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকে তখন দাম কমে, আবার সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিলে দাম বেড়ে যায়। এখন সবজির সরবরাহ ভালো, তাই দামও কম।

ক্রেতারাও বলছেন, গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে সবজির দাম কিছুটা কমেছে। এতে খুব একটা স্বস্তি না মিললেও তারা খুশি।

মাহমুদ নামের এক ক্রেতা বলেন, সবজির দাম কিছুটা কমেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে এটাই অনেক।

আরেক ক্রেতা মো. মাসুদ আলম বলেন, দাম কিছুটা কমেছে। তবে কিছু কিছু সবজির দাম আকাশছোঁয়া।

বর্তমানে এই বাজারে প্রতি আটি লাল শাক ১০ টাকা, পালং শাক ২০ টাকা, কলমির শাক ১০ টাকা, লাউ শাক ৩০ টাকা, পুঁই শাক ২০ টাকা, মাইরার শাক ২০ টাকা, মূলার শাক, ১০ টাকা, ডাটা শাক ১০ টাকা ও শাপলা ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে সবজির দাম কমলেও বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। বর্তমানে প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) রাজশাহীর পেঁয়াজ ৩৫০ টাকা, পাবনার পেঁয়াজ ৩৬০ টাকা, ফরিদপুরের পেঁয়াজ ৩০০ টাকা, আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অথচ গত সপ্তাহে প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) রাজশাহীর পেঁয়াজ ৩২৫ টাকা, পাবনার পেঁয়াজ ৩৩০ টাকা, ফরিদপুরের পেঁয়াজ ২৮০ টাকা ও আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ১৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।

দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে পেঁয়াজের পাইকারি বিক্রেতা মো. হেলাল মিয়া বলেন, এখন মাসের শুরু। সবাই বেতন পাওয়ার পর বাজার করতে আসছে। একসঙ্গে অনেক পেঁয়াজের চাহিদা সৃষ্টি হওয়ায় সরবরাহের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তাই দাম কিছুটা বেড়েছে। এটা ১০-১২ তারিখের দিকে আবার কমে যাবে।

নূরুল ইসলাম নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, হাটে পেঁয়াজ কম। কৃষকেরা পেঁয়াজ তুলছেন না। সেখান থেকেই আমাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তাই বাজারেও দাম বেড়েছে।

তবে আগের মতোই অপরিবর্তিত আছে আলু, আদা ও রসুনের দাম। বর্তমানে প্রতি কেজি আলু পাইকারিতে ৩৬ টাকা ও খুচরায় ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আমদানি করা ভারতীয় রসুন ২০০ টাকা, চায়না রসুন ২২০ টাকা, দেশি রসুন ২১০ টাকা, মিয়ানমারের আদা ২০০ টাকা ও ইন্দোনেশিয়ান আদা ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।