সবজি কিনতেও হিসাব করতে হচ্ছে

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: রাজধানীর কাঁচা বাজারগুলোতে শীতের আগাম সবজি উঠলেও অতিরিক্ত দামে নাকাল হচ্ছেন সাধারণ মানুষজন। কারণ হিসেবে বিক্রেতারা অবরোধের অজুহাত সামনে আনছেন। ঢাকায় পণ্য আনতে অতিরিক্ত খরচ লেগেছে এমন দাবি তুলে গত সপ্তাহের চেয়ে প্রায় প্রতিটি সবজিতেই চার থেকে পাঁচ টাকা বেশি দাম চাইছেন তারা। তাতে শীতের সবজির স্বাদ নেওয়া থেকে দূরে থাকতে হচ্ছে অনেক ক্রেতাকে।

বুধবার সরেজমিন রাজধানীর নিউ মার্কেটের বনলতা কাঁচাবাজার এবং বাইরের খুচরা দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, করলা, বেগুন, পটল, লাউ, কাঁচা পেঁপে, শসা, গাজর, ফুলকপি, বরবটি, চিচিঙ্গা, মিষ্টি কুমড়া, ঝিঙা, কচুর লতি, ঢেঁড়শ, লাউশাক, পালং শাক, লাল শাক, কলমি শাক, কচু শাকসহ সবধরনের শাক-সবজিতে বাজার ভরপুর। তবে কোনো সবজির দামই গত সপ্তাহের জায়গায় নেই।

এসব সবজির অধিকাংশটির দামই শুরু হচ্ছে ৭০, ৮০ ও ৯০ টাকায়। সর্বোচ্চ দাম হাঁকা হচ্ছে শিম, গাজর, বেগুনের। আকার ও মানভেদে ১০০-১৫০ টাকা পর্যন্ত দাম চাওয়া হচ্ছে প্রতি কেজি শিম। তাছাড়া নতুন ফুলকপি পিস ৬০-৮০ টাকা, ঢেঁড়শ ৭৫-৮০ টাকা, করলা ৮০-৯০ টাকা, বেগুন জাতভেদে ৭০-১৩০ টাকা, শালগম ১০০-১১০ টাকা, মূলা ৭০-৮০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৩০-৩৫ টাকা, কাঁচামরিচ ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫৫ টাকায়। পিছিয়ে নেই শসা, গাজরের দামও। দেশি শসা ৮০-৯০ টাকা, হাইব্রিড শসা ৬০-৭০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা ও বরবটি ১২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া, দেশি পেঁয়াজ ১৩০ টাকা, আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ১০০ টাকা, দেশি আদা ২২০ টাকা, দেশি রসুন ২২০ টাকা, ভারতীয় রসুন ১৭০-১৮০ টাকা এবং শুকনা লাল মরিচ ৪২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

শাকের বাজারও দামে পিছিয়ে নেই। লাউশাক, পালং শাক, লালশাক, কলমি শাক, কচু শাকসহ সবধরনের শাকের বাজারই চড়া। প্রতি আঁটি লাউ শাক ৬০-৭০ টাকা, পুঁই শাক ৫০-৫৫ টাকা এবং পালং শাক, লাল শাক, কলমি শাক ও কচু শাক ৩০-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নিউ মার্কেট কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী নুরুন্নবী বলেন, টমেটোর মৌসুম এখনও শুরু হয়নি। আগাম সবজি দাম তো একটু বেশিই পড়বে। তাছাড়া অবরোধের কারণে আড়তেই দাম দিতে হচ্ছে। তবে শীতের পুরো মৌসুম শুরু হলে দাম কিছুটা নাগালে আসবে।

অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, শাক-সবজি এখন মধ্যবিত্তের পাত থেকে উঠে যাচ্ছে। বাড়তি দামের কারণে ভালো শাক-সবজি কেনা সম্ভব হচ্ছে না। সবজি কিনতেও এখন খুব হিসাব করেই নিতে হচ্ছে। বাড়তি দামের লাগাম টানা না গেলে অবস্থা আরও শোচনীয় হবে বলেও মন্তব্য করেন অনেকে।

ঢাকা কলেজের দক্ষিণায়ণ ছাত্রাবাসের ডাইনিং ম্যানেজার শামীম আহমেদ বলেন, কোনো সবজিতে তো হাতই দেওয়া যায় না। এতদিন তরকারি হিসেবে আলু ব্যবহার করলেও এখন দাম বাড়ার কারণে সেটি কেনা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। একটা সবজিও কম দামে নেই। মানুষজন কি খাবে। শীতের পুরো মৌসুম শুরু না হলে এরকম অবস্থার পরিবর্তন হবে না।

স্বস্তির খবর নেই মুদিপণ্যেও। বুটের ডাল ৯০ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৭০ টাকা, মসুর ডাল ভারতীয় ১১০ টাকা, দেশি ডাল ১৩৫ টাকা, ছোলা ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়াও খোলা চিনিগুড়া চাল ১৩৫ টাকা, মিনিকেট চাল মানভেদে ৬৫, ৬০, ৫৫ টাকা, নাজিরশাইল চাল ৭০-৭৫ টাকা, চিনি ১৩৭ টাকা, গুঁড়াদুধ ৭৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। একইসঙ্গে সয়াবিন তেল প্রতি লিটারের দাম পড়ছে ১৭০ টাকা। রুপচাঁদা ব্র্যান্ডের ৫ কেজির সয়াবিন তেলের বোতলের দাম হয়েছে ৮০০ টাকা এবং পামঅয়েল বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকা কেজি দরে। ঢাকা পোস্ট।