যাত্রী বাড়লেও ট্রেন বাড়েনি খুলনা রুটে

ঢাকা হতে খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস থেকে সড়ক পথে যাত্রায় যানজট, অতিরিক্ত ভাড়া, দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেশি হওয়ায় দিন দিন রেল ভ্রমণে মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। এর ব্যতিক্রম নয় ঢাকা-খুলনা রুটেও।

যাত্রীর সংখ্যা বাড়ায় অতিরিক্ত কোচ সংযোজন করা হলেও এ রুটে বাড়েনি ট্রেনের সংখ্যা।

যাত্রীর চাহিদা ও চাপ সামাল দিতে এ রুটে অন্তত বর্তমান এক জোড়া ট্রেনের (সুন্দরবন ও চিত্রা এক্সপ্রেস) পাশাপাশি আরো অন্তত এক জোড়া ট্রেন চালু করা প্রয়োজন বলে মনে করেন সাধারণ যাত্রীরা।

Luxurious train Sundarban express | inside/outside full review | 725/726|  Dhaka to Khulna | TravelerBase | Traveling Tips & Suggestions
ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

সোমবার সকালে খুলনা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া চিত্রা এক্সপ্রেসে ভ্রমণকালে দেখা গেছে যাত্রীসেবা নিশ্চিতে রেলের নানা পদক্ষেপ। কোনো কোচেই নেই স্ট্যান্ডিং যাত্রী। হকার, হিজড়া ও ভিক্ষুকদের কোনো উৎপাত নেই। এসব নিয়ন্ত্রণে গার্ড ও রেল পুলিশ এখন কঠোর অবস্থানে। যে কারণে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন

যাত্রীরা স্বস্তিতে ভ্রমণ করতে পারছেন। সুন্দরবন এক্সপ্রেসের এক্সট্রা কোচ-১ এর যাত্রী রবিউল ইসলাম বলেন, আমার বাবা ক্যানসারে আক্রান্ত। তাকে কেমোথেরাপি দিয়ে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছি। ট্রেনে যাতায়াত আরামদায়ক ও স্বাচ্ছন্দ্যের হওয়ায় আমার অসুস্থ বাবাকে নিয়ে ট্রেনে ভ্রমণ করছি। ট্রেনের পরিবেশ ও সেবার মান আগের থেকে অনেক ভালো হওয়ায় ভ্রমণ করতে স্বস্তি লাগে।

রেলের সেবায় স্বস্তি প্রকাশ করে স্নিগ্ধা কোচের যাত্রী এম রহমান বলেন, অফিসিয়াল কাজে খুলনা যাচ্ছি। দূরপাল্লার যাত্রার ট্রেনেই স্বস্তি। তবে, আগে ট্রেনের সেবার কারণে এ স্বস্তির যাত্রায় অনেক বিড়ম্বনায় পড়তে হতো। এখন সেই ঝামেলা আর নেই। ঢাকা থেকে খুলনাগামী যাত্রী সংখ্যা বেশি হওয়ায় টিকিট পেতে কষ্ট হয়েছে। এ রুটে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো এখন যাত্রীদের প্রাণের দাবি।

যাত্রীরা বলেন, খুলনা তৃতীয় বৃহত্তম শিল্প ও বন্দর নগরী। চিংড়ি শিল্প, সুন্দরবন প্রভৃতি কারণে খুলনা বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। ব্যবসায়ীদের একটি বড় অংশ খুলনায় থেকেই তাদের ব্যবসায়িক কাজকর্ম পরিচালনা করে থাকেন। যারা নিয়মিত ঢাকায় যাতায়াত করেন। এছাড়া চাকরিজীবী, শিক্ষার্থী, সর্বস্তরের মানুষের প্রতিনিয়তই ঢাকায় যাতায়াত করতে হয়। টিকিট ওপেন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। কাঙ্ক্ষিত দিনের টিকিট পাওয়া ভগ্যের ব্যাপার।

আক্ষেপ তারা আরও বলেন, ইতোপূর্বে ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বেনাপোল সরাসরি ট্রেন সার্ভিস চালু হলেও খুলনায় চালু হয়নি।

রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের কাছে এ অঞ্চলের যাত্রী চাহিদা অনুযায়ী প্রতিদিন ন্যূনতম একটি ট্রেন সরাসরি ঢাকা-খুলনা চলাচলের ব্যবস্থা করার দাবি জানান তারা।

অন্যদিকে খুলনা থেকে ঢাকাগামী যাত্রীরাও এখই ভোগান্তি সহ্য করে ট্রেনে ভ্রমণ করছে। বাংলা নিউজ টুয়েন্টিফোরের মাধ্যমে জানা যায় , খুলনা রেলস্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার আশিক আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, বিগত দিনের চেয়ে এখন যাত্রীরা রেলকে বেছে নিচ্ছেন ভ্রমণের জন্য। কেন না আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন ট্রেন ভ্রমণ আরামদায়ক। এখন ট্রেন শিডিউল বিপর্যয় নেই বললে চলে। ট্রেনে কোনো ধরনের হকার ,ভিক্ষুক ও হিজড়া উঠা নিষেধ। সিট ছাড়া কোনো ধরনের স্টান্ডিং দেওয়া হয় না। এখন প্রায় সব আন্তঃনগর ট্রেনে টিকিট বিক্রি হয়ে যায়। যেমন, ৫ মার্চের পরিসংখান অনুযায়ী রাজশাহীগামী কপোতাক্ষ ট্রেনে ৯৯৭ টিকিটের ভেতর সেল হয়েছে ৭১৩টি, চিলাহাটীগামী রূপসা ট্রেনে ১০৫৬ ভেতর সেল হয়েছে ১০০৭টি, ঢাকাগামীটি চিত্রা ট্রেনে ১০১৭ ভেতর সেল হয়েছে ১০১৭টি। রাজশাহীগামী সাগরদাঁড়ী ট্রেনের সেল হয়েছে ৮০৬, ঢাকাগামী সুন্দরবন ট্রেনে সেল হয়েছে ১৩১৯টি। ৬ মার্চের ঢাকাগামী চিত্রা ট্রেনের ৯১২ ও সুন্দরবন ট্রেনের ৯৪৪টি টিকিট বিক্রি হয়েছে। ৭ মার্চ চিত্রা ট্রেনের ৯১২টি টিকিট বিক্রি হয়েছে। ১০০ শতাংশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন নিশ্চিত করা হয়। রেল দুইভাবে টিকিট বিক্রি করায় অনলাইনে ঘরে বসে টিকিট কাটতে পারছেন যাত্রীরা। ঢাকা-খুলনা-ঢাকা রুটে নভেম্বর-মার্চ সুন্দরবন ভ্রমণের টুরিস্টদের জন্য প্রতিদিন প্রায় ২-৩টি অতিরিক্ত কোচ সংযোজন করা হচ্ছে। যাত্রীর চাপ সামাল দিতে হলে খুলনা-ঢাকা রুটে ডাবল লাইন করে আরও ট্রেন বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করছেন রেলের এ কর্মকর্তা।