৬ মাসের মধ্যে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল যাবে কাঁচপুরে

ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: আগামী ৬ মাসের মধ্যে কাঁচপুরে প্রাথমিক ভাবে স্থানান্তর হচ্ছে রাজধানীর সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের সেবা প্রদান কার্যক্রম।

বুধবার ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে ঢাকা নগর আন্তঃজেলা বাস প্রান্তের (টার্মিনাল) নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

নির্মাণ কাজের উদ্বোধনের পর তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহরের গণপরিবহন ব্যবস্থাপনাকে সুষ্ঠু ও শৃঙ্খলাবদ্ধ করার লক্ষ্যে বাস রুট রেশনালাইজেশনের কমিটির সভার সিদ্ধান্তের আলোকে আমরা আজ কাঁচপুরে ঢাকা নগর আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেছি। এটি দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষিত ছিল। কারণ, ১৯৮৪ সালের পরে আর কোনো আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল নির্মিত হয়নি। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে আমাদেরকে এখানে সাড়ে ১২ একরের ঊর্ধ্বে জমি দেওয়া হয়েছে। এখানে টার্মিনাল নির্মাণ সম্পন্ন হলে চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের ১৬ জেলার আন্তঃজেলা বাস সেবা এখান থেকেই পরিচালনা করা হবে।’

টার্মিনাল নির্মাণের প্রাথমিক কার্যক্রম নিজস্ব অর্থায়নেই বাস্তবায়িত হবে উল্লেখ করে তাপস বলেন, ‘এই টার্মিনাল ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নিজস্ব অর্থায়নেই নির্মাণ করছে এবং এটা পরিচালনার পূর্ণ দায়িত্বও সিটি কর্পোরেশন পালন করবে। নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার পর বাসগুলো এখান থেকেই সেবা দেওয়া শুরু করবে। আমাদের বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির যে পরিকল্পনা, তার আওতায় গণপরিবহন ব্যবস্থাপনাকে আমরা একটি সুষ্ঠু ও শৃঙ্খলার আওতায় নিয়ে আসব। ধাপে ধাপে আমরা সে লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছি।’

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাস নাগাদ কাঁচপুর আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করার আশাবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা এখানে মাটি ভরাট, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, বাস প্রবেশ ও বের হওয়া এবং শ্রমিকদের থাকার ছাউনির ব্যবস্থা করা হবে। প্রাথমিক পর্যায়ের এ কার্যক্রম বাস্তবায়নে ২৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে। আমরা আশাবাদী, আগামী ছয় মাসের মধ্যেই প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ এখানে শেষ হয়ে যাবে। অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি নাগাদ ঢাকা নগর আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের কার্যক্রম আমরা শুরু করতে পারব। সেই লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে আমরা আজকে এই কাজ শুরু করছি।’

কাঁচপুরে ঢাকা নগর আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালসহ অন্যান্য টার্মিনালগুলোর নির্মাণ সম্পন্ন হলে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালটি শুধু শহরের অভ্যন্তরে চলাচল করা নগর পরিবহনের বাসগুলোর টার্মিনাল হিসেবে ব্যবহৃত হবে বলে জানান ঢাদসিক মেয়র।

এ সময় এ কার্যক্রম বাস্তবায়নে দিকনির্দেশনা ও সহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও সড়ক সচিবকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘ঢাকা শহর থেকে পর্যায়ক্রমে টার্মিনালগুলো সরাতে হবে। এটি সে কার্যক্রমেরই প্রথম উদ্যোগ। এই শহরটা, এই দেশটা আমাদের সবার। এখানে টার্মিনাল নির্মাণ হলে মেয়র সাহেব যে জেলাগুলোর কথা বললেন সেসব জেলার গাড়িগুলো এখান থেকেই পরিচালিত হবে। এ ব্যাপারে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা দেব ইনশাআল্লাহ।’

ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক সাবিহা পারভীন বলেন, ‘সায়দাবাদ আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে ১৬ জেলার ১১ হাজার বাস আসা-যাওয়া করে। এই বাসগুলো যদি ঢাকা মেট্রোপলিটন সিটির ভেতরে না ঢুকে, তাহলে আমাদের ৩০ শতাংশ যানজট কমে যাবে। এটা আমাদের জন্য এক বিরাট মাইলফলক হবে।’

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, পরিবহন মহাব্যবস্থাপক মো. হায়দর আলী, প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কাজী বোরহান উদ্দিন, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আজমল উদ্দিন আহমেদ, স্থানীয় কাঁচপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

-এসআর