জেলেদের মুখে হতাশার ছাপ

মা ইলিশসহ ইলিশ বৃদ্ধির জন্য ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে দুইদিন অতিবাহিত হলেও জেলেদের জালে ধরা পড়ছেনা কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। গভীর সাগর থেকে এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য না পাওয়া গেলেও পাথরঘাটার পশ্চিমে বলেশ্বর ও পূর্বে বিষখালী দুই নদীতে জেলেদের জালে মাছ ধরা না পড়ায় জেলেদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।

এ বছর মৌসুমে ইলিশের প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। গত বছর এই নিষেধাজ্ঞা ছিল ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত।

এর আগে, সোমবার (২৫ অক্টোবর) রাত ১২টার পর থেকে ইলিশ শিকারে সাগর ও নদীতে যাত্রা শুরু করে উপকূলের জেলেরা। মধ্যরাত থেকে জলেরা নেমে পড়েছেন জাল-নৌকা নিয়ে। কিন্তু দুদিনে দুই নদীতে ইলিশ মেলেনি বললেই চলে। বুধবার (২৭ অক্টোবর) সকালে বিষখালী নদী থেকে ফিরে আসা জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ মুহূর্তে যে পরিমাণ মাছ ধরা পরার কথা তা মিলছেনা। তাতে নৌকার জ্বালানি খরচও মেটে না।

দুপুরে বিষখালী নদী থেকে ফিরে আসা জেলে মো. সোহরাব হোসেন, আ. জব্বার বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে দুদিন। পুরো একটি রাত নদীতে জাল ফেলে অপো করেও একটি মাছও পাই নাই। তেলের খরচ ওঠা তো দূরের কথা গত বছর এ সময়ও তেমন মাছ পাওয়া যায় নাই। তাদের মতে গভীর সাগরে বড় বড় জাহাজে (ট্রলিং) ছোট বড় সব মাছ মেরে ফেলার কারণেই আস্তে আস্তে মাছ কমে যাচ্ছে।

পাথরঘাটা বিএফডিসির মৎস্য আড়তদার মো. মারুফ হোসেন বলেন, দুইদিন অতিবাহিত হলেও জেলেদের জালে মাছ ধরা পড়ছেনা। এতে করে শুধু যে জেলেদের সমস্যা হচ্ছে এমন নয়, আমরা যারা আড়তদার বা পাইকার আছি তাদেরও অনেক লোকসান হচ্ছে। তাছাড়া মাছের সঙ্গে সকল ব্যবসায়ীরাও হতাশা এবং উদ্বিগ্ন।

পাথরঘাটা পৌর শহরের খাবার হোটেল ব্যবসায়ী মো. রিপন বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর খাবারের সঙ্গে ইলিশ মাছ প্রধান হিসেবে অনেক অর্ডার পাই। কিন্তু বাজারে ইলিশ না পাওয়ায় অর্ডার ফেরত দিতে হচ্ছে।

বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, অনেক আশা নিয়েই নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেদের সাগরে পাঠিয়েছি। ৭ থেকে ১০ দিন পর ওইসব ট্রলার আসবে। এখন পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত কোনো তথ্য পাইনি। তবে বিষখালী ও বলেশ্বর নদে দুইদিনেও জেলেদের জালে তেমন কোন মাছ পাওয়া যায়নি।

পাথরঘাটা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু বলেন, সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষে এখন জেলেদের জালে মাছ ধরা পড়ার কথা। আমরা আশাবাদি জেলেদের জালে মাছ ধরা পড়বে।