‘ই-ভ্যালির’ বিরুদ্ধে গ্রাহক হয়রানির গুরুতর অভিযোগ

ঢাকা, ১৮ মার্চ বুধবারঃ কেনাকাটার অনলাইন প্লাটফর্ম ই-ভ্যালি ডটকমের বিরুদ্ধে গ্রাহক হয়রানি ও প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর ভোক্তা অভিযোগ কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুত পণ্য না দেয়া, ভোক্তার টাকা আটকে রাখা, সময়মতো ডেলিভারি না দেয়া, প্রাথমিক দাবির অতিরিক্ত অর্থ কেটে রাখা এবং ভোক্তার অভিযোগে কোনো কর্ণপাত না করে তাকে দিনের পর দিন হয়রানির অভিযোগ করেছেন একাধিক গ্রাহক। আকর্ষণীয় অফার দিয়ে তারা ভোক্তাদের আকৃষ্ট করলেও পরে তাদের প্রতারণার শিকার হতে হচ্ছে ভোক্তাদের।

এমনই একজন অভিযোগকারী চট্টগ্রামের মাহমুদুল হাসান। তিনি জানান, ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে পণ্য পাঠানোর কথা থাকলেও একটি টেলিভশন সেট অর্ডার করার পর সেটি পেতে তার ৩২ দিন সময় লেগে যায়। তাছাড়া অর্ডারের সময় পণ্যটি সরাসরি ই-ভ্যালি বিক্রি করছে বলা হলেও গ্রাহক পণ্য হাতে পাওয়ার সময় দেখেন সেটি ভিন্ন একটি কোম্পানির মাধ্যমে তার কাছে বিক্রি করা হয়েছে।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, অফারে উল্লেখ ছিল কোনো ডেলিভারি চার্জ দিতে হবে না। অথচ পণ্য বুঝে নেয়ার সময় তাকে ৩৫০ টাকা চার্জ হিসেবে অতিরিক্ত পরিশোধ করতে হয়।  ভোক্তার সবচেয়ে বড় আপত্তির জায়গা ছিল, যে নামের/ব্র্যান্ডের টেলিভিশন তিনি অর্ডার করেছিলেন, সেই নামের পণ্য তিনি পাননি। যদিও প্যাকেজের বক্সটি ছিল তার কাঙ্ক্ষিত কোম্পানির, কিন্তু ভেতরে থাকা টেলিভিশন সেটের গায়ে নামের বানানে পার্থক্য ছিল। যা কিনা সাধারণত পণ্য বিক্রিতে প্রতারণার উদ্দেশ্যেই করা হয়ে থাকে।

সিলেটের মিরাবাজার থেকে শাহ শাওন ভোক্তা অভিযোগ কেন্দ্রে জানান, ই-ভ্যালি কোনো অফার দিলে পণ্যের রেগুলার দাম বাড়িয়ে দিয়ে পরে তার ওপরে অফার দেয়। ক্যাশব্যাকের অফারে ফিরতি টাকা দেয়া হয় ই-ভ্যালির ওয়ালেটে। যা ক্যাশআউট করার কোন উপায় নেই। ওই টাকা দিয়ে শুধু ই-ভ্যালি থেকেই কিছু কেনা যায়। কিন্তু ওয়ালেটের টাকা থেকে পণ্যের অর্ডার করেও তা পাওয়া যায় না। ওয়ালেটের টাকা থেকে ২ হাজার ৭৫০ টাকার পণ্য কিনে বড় ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাকে। অনেক দিন অপেক্ষার পরও অর্ডারকৃত পণ্য না পেয়ে অনলাইনে তাদের সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেন। এমনকি অভিযোগও দাখিল করলেও ই-ভ্যালি কোন উত্তর দেয়নি। কাস্টমার কেয়ারে ফোন দিলে তারা শুধু এইটুকুই বলে, পেয়ে যাবেন। কবে পাব, কেন দেরি হচ্ছে এই ব্যাপারে কিছুই জানে না বলে উত্তর দেয়। প্রায় মাসখানেক পর ভোক্তা একটি প্যাকেজ পেলেও তাতে সবগুলো পণ্য ছিল না। এ নিয়ে ইভ্যালির কাস্টমার কেয়ারে কল দিলে তারা ভোক্তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে এবং কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তার ফোন কেটে দেয়।

ভুক্তভোগী গ্রাহকদের অভিযোগ জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে পাঠানো হয়ে বলে অভিযোগ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে।