ফেরি সংকটে ভুগছে দৌলতদিয়া ঘাট, ভোগান্তি চরমে

ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রবেশদ্বার খ্যাত রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাট। এ ঘাট দিয়ে প্রতিদিন প্রায় তিন থেকে চার হাজার যানবাহন নদী পারাপার হয়। কিন্তু বর্তমানে ফেরি সংকটে ভুগছে এই রুটটি। যানবাহনের তুলনায় ফেরির সংখ্যা কম থাকায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা যানগুলোকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মহাসড়কে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। ফলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে চালকদের।

গত এক সপ্তাহ আগে ফেরিঘাট স্বাভাবিক থাকলেও বর্তমানে এই রুটে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। তবে যানবাহনের চাপ বাড়লেও ফেরি সংখ্যা বাড়েনি। আগে যেখানে এই রুটে ২০টি ফেরি চলাচল করত, সেখানে এখন ১৬টি চলাচল করছে।

বুধবার (১৯ জানুয়ারি) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় দেখা গেছে, ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে যানবাহনের সারি ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের তিন কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত ছেড়ে গেছে। এর মধ্যে দূরপাল্লার বাস, পণ্যবাহী ট্রাক, কার্ভাডভ্যান ও ব্যক্তিগত গাড়ি রয়েছে।

অন্যদিকে ফেরিঘাট থেকে সাড়ে ১৩ কিলোমিটার দূরে গোয়ালন্দ মোড় থেকে রাজবাড়ীর দিকে কল্যানপুর বাজার পর্যন্ত আরও দুই কিলোমিটার এলাকায় অপচনশীল পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। এসব পণ্যবাহী ট্রাকের ফেরির নাগাল পেতে সময় লাগছে ১৫-২০ ঘণ্টা। ফলে তীব্র শীত ও মহাসড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এ কারণে চালকদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, দৌলতদিয়ায় ৭টি ফেরিঘাটের মধ্যে মাত্র ৪টি ঘাট চালু রয়েছে। নাব্য সংকটসহ নানা কারণে বন্ধ রয়েছে ৩টি ফেরিঘাট। এ ছাড়া এ রুটে ফেরি চলাচল করছে ১৬টি। ৪টি ফেরি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেরামতে রয়েছে। এর মধ্যে ৩টি রো রো (বড়) ফেরি ২ মাস ধরে নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ডে মেরামতের জন্য রয়েছে। এখানে স্বাভাবিক যানবাহন পারাপারে অন্তত ২০-২২টি ফেরি সচল থাকা দরকার। এ ছাড়া শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুট স্বাভাবিক না হওয়ায় সেখানকার বেশিরভাগ যানবাহন এদিক দিয়ে চলাচল করছে। ফলে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাটের ওপর চাপ সহসা কমছে না।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক খোরশেদ আলম বলেন, তিন মাস আগেও দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে যানবাহন ও যাত্রী পারাপারের জন্য ১২টি রো রো (বড়) ফেরিসহ মোট ২১টি ফেরি চলাচল করত। তবে বর্তমানে ছোটবড় মিলিয়ে ১৬টি ফেরি চালু রয়েছে। বেশির ভাগ ফেরি পুরাতন হওয়ায় মাঝেমধ্যেই যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিচ্ছে। এ ছাড়া হঠাৎ করেই ঢাকামুখী যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে দৌলতদিয়া প্রান্তে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।