ডুমুরিয়ায় আবারও পেঁয়াজের দাম বাড়লো

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: খুলনার ডুমুরিয়ায় আবারও পেঁয়াজের দাম বাড়লো। এক রাতে কেজিতে ১৫ টাকা বেড়ে পণ্যটি খুচরা পর্যায়ে ১১০ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি বন্ধ থাকায় কয়েক মাস ধরে চাষিদের তোলা মুড়িকাটা পেঁয়াজে চাহিদা মেটানো হচ্ছিল।

দেশীয় এ পেঁয়াজের সরবরাহও প্রায় শেষ। চাহিদার তুলনায় জোগানে টান পড়ায় আবারও বাজারে তার প্রভাব পড়েছে।

অন্যান্য বছর মৌসুমের এ সময়ে পেঁয়াজের দর থাকে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি। কিন্তু এবার ভরা মৌসুমেও অস্বাভাবিক ভাবে ওঠানামা করছে মসলা জাতীয় পণ্যটির দর। গত বুধবার রাতেও খুলনার ডুমুরিয়া খুচরা বাজারে ৯৫-৯৬ টাকায় বিক্রি হয় পেঁয়াজ। তবে বৃহস্পতিবার সকালে তা একলাফে ১১০ থেকে ১১৫ টাকায় পৌঁছে।

পাইকারি বাজারে বৃদ্ধির কারণে খুচরা বাজারেও তার প্রভাব পড়েছে। খুলনা ডুমুরিয়া উপজেলার বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১১০ টাকায়।

আঠারো মাইল বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী মো. মোয়াজ্জেম বলেন, ডলারের দাম বাড়ার কারণে ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ আমদানি করতে পারছেন না। বাজারে মুড়িকাটা ছাড়া কোনো পেঁয়াজ নেই। এখন মুড়িকাটা পেঁয়াজের সরবরাহও শেষ দিকে। এ কারণে দাম বেড়েছে। এক-দেড় মাস পর হালি পেঁয়াজ এলে দাম কমতে পারে।

তথ্যমতে, গত দুই মাসে চীন ও পাকিস্তান থেকে এক হাজার ৪৫৪ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। যা চাহিদার দিক থেকে একেবারেই নগণ্য।

পেঁয়াজ আমদানি না হওয়ার কারণ হিসেবে ডুমুরিয়ার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মহিদুল ইসলাম বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আসছে না। অন্য দেশ থেকে আমদানি করলে কেজি ৭০ থেকে ৭৫ টাকা পড়ে। এর সঙ্গে অন্যান্য খরচ ও মুনাফা হিসাব করলে ১০০ টাকার কাছাকাছি হয়। ভারত থেকে আমদানি শুরু হলে ৪০-৪৫ টাকায় নেমে যাবে দর। তখন অন্য দেশ থেকে আনা পেঁয়াজে লোকসান গুনতে হবে ব্যবসায়ীদের। মূলত এ কারণেই তারা আমদানি করছেন না।

তিনি আরও বলেন, হালি পেঁয়াজ উঠতে আরও এক-দেড় মাস সময় লাগবে। দামের লাগাম টানতে চাইলে সরকারের উচিত ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ নেওয়া। কারণ, প্রতিবেশী দেশ হওয়ায় ভারত থেকে দুই/তিন দিনেই পেঁয়াজ আনা সম্ভব।

দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২৪ থেকে ২৬ লাখ টন। দেশীয় উৎপাদনের পরও প্রতি বছর ১০ থেকে ১২ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয় ভারত থেকে। তবে ভারত রপ্তানি বন্ধ করলেই দেশের বাজারে বড় প্রভাব পড়ে। গত ডিসেম্বরের শুরুতে ভারত রপ্তানি বন্ধ করার পর দেশে পেঁয়াজের দাম ২০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। সে সময় মুড়িকাটা পেঁয়াজও ১৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছিল। জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় নেমে এলেও এখন আবার বাড়তে শুরু করেছে।

এদিকে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া আছে। তবে ভারত থেকে রপ্তানি বন্ধ থাকায় আমদানি হচ্ছে না। অন্য দেশ থেকে আমদানির সুযোগ থাকলেও খরচ ও সময় বেশি লাগার কারণে আমদানিকারকরা আগ্রহী নন।