জ্বালানি নিরাপত্তায় ঢাকায় মিৎসুবিশি’র সেমিনার

ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: জাপানের বহুজাতিক কোম্পানি মিৎসুবিশি হেভি ইন্ডাস্ট্রিজের পাওয়ার সল্যুশন ব্র্যান্ড মিৎসুবিশি পাওয়ারের আয়োজনে ‘গ্যাস টারবাইন টেকনিক্যাল সেমিনার ইন বাংলাদেশ-২০২২’ শুরু হয়েছে। 

রবিবার (১১ ডিসেম্বর) ঢাকায় দুই দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে মিতসুবিশি’র বাংলাদেশের শাখা। সেমিনারে জ্বালানি নিরাপত্তা এবং ডিকার্বনাইজেশন খাতের অগ্রগতি সাধনে বিদ্যুৎ উৎপাদন শিল্পে সর্বাধুনিক সল্যুশন ও সার্ভিস নিয়ে আলোচনা করা হয়।

দুই দিনব্যাপী এই আয়োজনে মিৎসুবিশি পাওয়ারের প্রযুক্তিগত বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকে বিশেষ ইউজার সেশন ও প্রেজেন্টেশন রয়েছে। এখানে মিৎসুবিশি পাওয়ারের হাইড্রোজেন এবং অ্যামোনিয়া কো-ফায়ারিংয়ের মতো ডিকার্বনাইজেশন প্রযুক্তি থেকে শুরু করে গ্যাস টারবাইনের নির্ভরযোগ্যতা ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির মতো শিল্প খাতে নেতৃত্বপ্রদানে সক্ষম সল্যুশন্স ও পরিষেবাসমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হচ্ছে।   

সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান, জাপান দূতাবাসের প্রতিনিধি ও মিনিস্টার (ডেপুটি চিফ অব মিশন)  মাচিদা তাতসুয়া এবং মিৎসুবিশি পাওয়ার এশিয়া প্যাসিফিক-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার ওসামু ওনো উপস্থিত ছিলেন।

 অনুষ্ঠানে বক্তারা জ্বালানি নিরাপত্তা, সহজলভ্যতা ও সামর্থ্য বজায় রেখে ক্লিনার এনার্জিতে বাংলাদেশের উত্তরণে পাশে থাকার লক্ষ্যে দেশের সংশ্লিষ্ট খাত ও শিল্পে অংশীদারিত্বের গুরুত্ব তুলে ধরেন।  

মিৎসুবিশি পাওয়ার এশিয়া প্যাসিফিক-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার ওসামু ওনো বলেন, ‘এশিয়া প্যাসিফিকের দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশই প্রথম, যেখানে মিৎসুবিশি পাওয়ার ১৯৬০ সালে সফলভাবে একটি স্টিম টারবাইন সরবরাহ করেছিল। সেই থেকে আজ পর্যন্ত আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতিতে অবিচল রয়েছি এবং দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ২০% এর দায়বদ্ধতা বহন করছি। সম্ভাব্য অগ্রগতি সাধন সম্ভব করা গেলে এ দেশের বিদ্যুৎ খাতের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের মূল্যবান অংশীদার ও গ্রাহকদের সাথে নিয়ে আমরা বাংলাদেশের জ্বালানির চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে জিরো কার্বন নির্গমনের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’   

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মো. হাবিবুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, সারা দেশে ১০০% বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পর, তাদের অন্তর্বর্তীকালীন লক্ষ্য হল সকলের জন্য সাশ্রয়ী, উন্নত মানের এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা। তিনি আশা ব্যক্ত করেন যে, ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০,০০০ মেগা ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য পূরণে মিৎসুবিশি পাওয়ার বাংলাদেশের পাশে থাকবে। তিনি ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ এর কথা উল্লেখ করে হাইড্রোজেন প্রযুক্তি ব্যবহারের উপর আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং গ্রিন হাইড্রোজেন ও ব্লু হাইড্রোজেনের মতো পরিষ্কার ও নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস ব্যবহারের উপর জোর দেন।

প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রায় ২ যুগেরও বেশি সময় ধরে মিৎসুবিশি পাওয়ার বাংলাদেশ সরকারের সাথে পাবলিক/প্রাইভেট অংশীদার হিসেবে যুক্ত রয়েছে এবং এই দীর্ঘ সময়ে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে সাহায্য করে আসছে। বর্তমানে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও হাইড্রোজেন কেন্দ্রিক বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করেছে যা কার্বন নির্গমনের মাত্রা হ্রাস করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। সেমিনারটির মাধ্যমে মিৎসুবিশি পাওয়ার দেশের জ্বালানি চাহিদা পূরণের সাথে সাথে শূন্য কার্বন নির্গমনের লক্ষ্য অর্জনে সরকারের সাথে অংশীদারিত্ব জোরদার করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

মিৎসুবিশি পাওয়ারের গ্যাস টারবাইনগুলি সারা দেশে পাঁচটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বাংলাদেশের পাওয়ার গ্রিডকে সহযোগিতা করছে। এর এম৭০১এফ গ্যাস টারবাইনটি হরিপুরে বাংলাদেশের প্রথম বৃহৎ-শ্রেণীর গ্যাস টারবাইন হিসেবে ইনস্টল করা হয়েছিল এবং ২০১৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এটি দেশের সবচেয়ে দক্ষ ও নির্ভরযোগ্য টারবাইনগুলোর একটি। সারা দেশে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য প্ল্যান্টগুলো কার্যকর রাখতে বিক্রয়োত্তর এবং অপারেশন ও রক্ষণাবেক্ষণ সার্ভিসে স্বয়ংসম্পূর্ণ রাখা হয়।

উল্লেখ্য, ১৮৭০ সালে জাপানে প্রতিষ্ঠিত এ বহুজাতিক কোম্পানিটি ১৫১ বছর ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে খনন, জাহাজ নির্মাণ, টেলিকম, আর্থিক সেবা, বিমা, ইলেকট্রনিক্স, মোটরগাড়ি, নির্মাণ, ভারী শিল্প, তেল এবং গ্যাস, আবাসন, খাবার