সক্ষমতা ও চাহিদার সঙ্গে সমন্বয় না থাকায় গ্রিডে বিপর্যয়

ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: বর্তমান সময়ে বিদ্যুতের উৎপাদন, সরবরাহ, ও চাহিদার সঙ্গে জাতীয় গ্রিডের উন্নয়ন না করা এবং প্রযুক্তিগত সক্ষমতার পাশাপাশি সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থার জোরদার না করার কারণেই জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় হতে পারে বলে মনে করছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন।

বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি করেন গ্রাহক অধিকার নিয়ে কাজ করা এ সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ।

বিবৃতিতে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, পিজিসিবি দাবি করছে তারা জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিড ও সঞ্চালনকে আধুনিক প্রযুক্তিগত ভাবে মানোন্নয়ন করেছেন। তাহলে আমাদের প্রশ্ন দু’দিন অতিবাহিত হলেও গ্রিড বিপর্যয়ের কারণ জানা যাচ্ছে না কেন? আধুনিক প্রযুক্তি যদি ব্যবহার করাই হতো তাহলে ত্রুটি কোথায় তা স্বয়ংক্রিয় ভাবেই সঙ্গে সঙ্গে শনাক্ত করা যেত। অথচ পিজিসিবির কাছে ন্যাশন ওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন) ফাইবার লাইসেন্স রয়েছে। এবং তারা বিদ্যুৎ সঞ্চালনের সিগন্যাল ব্যবস্থাকে সক্রিয় রাখতে এই ফাইবার ব্যবহার করে থাকেন। 

তিনি আরও বলেন, প্রযুক্তিগত এতো বিশাল মাপের একটি ফাইবার নেটওয়ার্ক তাদের হাতে থাকা সত্ত্বেও তারা প্রযুক্তিগত ব্যবহার গড়ে তুলতে পারেনি। নিজেরা ব্যবহার করতে না পারলেও বেসরকারি টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানিগুলোর কাছে তাদের ফাইবার লিজ দিয়ে প্রতি বছরে শত শত কোটি টাকা মুনাফাও করছে পিজিসিবি। অন্যদিকে গত মাসে সরকারি প্রতিষ্ঠান প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধিভুক্ত সার্ট সংবাদ সম্মেলন করেও পিজিসিবিকে সতর্ক করেছিল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে পিজিসিবি কতটুকু সাইবার নিরাপত্তায় উন্নতি করেছে সেটিও খতিয়ে দেখা দরকার।

মহিউদ্দিন দাবি করেন, ৩০-৪০ বছর পূর্বের গ্রিডের সক্ষমতা খুব একটা না বাড়লেও উৎপাদন বেড়েছে বহুগুণ। ২০০৯ সালে যেখানে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ছিল মাত্র ২৭টি তা বর্তমানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫৪টি। উৎপাদন ক্ষমতা ছিল যেখানে চার হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার ৭৩০ মেগাওয়াট (ক্যাপটিপ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ)। এর সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয়েছে সাইবার হামলাকারীদের উৎপাত। তাই প্রযুক্তিগত উন্নয়নের পাশাপাশি গ্রীডের সক্ষমতা ও নিরাপত্তার নিশ্চিত করতে একটি প্রযুক্তিগত ইকো সিস্টেম গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরী। পাশাপাশি সাইবার নিরাপত্তায় বিশেষ ইউনিট গঠন করাও জরুরী।

তিনি বলেন, বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার বিঘ্ন ঘটায় চরম ভাবে ব্যাহত হয়েছে টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেট সেবা, মোবাইল ব্যাংকিং ও ইন্টারনেটভিত্তিক এটিএমসহ সকল কার্যক্রম। বর্তমান প্রযুক্তির যুগে নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট ও টেলিকমিনিকেশন সেবা সচল রাখতে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবিচ্ছিন্ন হওয়া জরুরী। জাতীয় গ্রিড বিপর্যয়ের ফলে সকল ধরনের যোগাযোগ ও কার্যক্রম বন্ধ হয়ে জীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছিল। 

আগামী দিনে যাতে এ ধরনের বিপর্যয় আর না ঘটে সে দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।