মানব দেহ থেকে ইঁদুরের শরীরে ঢুকেই ডেল্টা প্লাস হয়ে উঠেছে ওমিক্রন : গবেষণা

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: কিভাবে করোনা ভাইরাস পরিবর্তিত হয়েছে সেটার উৎস জানতে না পারলে এর মিউটেশন ঠেকানো সম্ভব হবে না। তাই একদল বিজ্ঞানী এর উৎস নিয়ে গবেষণা শুরু করেছিলেন। গবেষণা যতই এগুচ্ছিলো ততই চাঞ্চল্যকর তথ্যে জন্ম নিচ্ছিলো। অবশেষে গবেষণা থেকে জানা গেছে- মানুষের শরীর থেকে মনুষ্যেতর প্রাণীর শরীরে গিয়েই (জুনোসিস) নিজের জিনগত কাঠামো বদলে ফেলে নতুন স্ট্রেনের জন্ম দিচ্ছে করোনা।

এই গবেষণালব্ধ থিউরির অন্যতম উদাহরণ হলো ওমিক্রন। মনুষ্য দেহ থেকে ধেড়ে ইঁদুরের শরীরে ঢুকেই ডেল্টা প্লাস হয়ে উঠেছে ওমিক্রন। তারপর সেই নতুন স্ট্রেন সংক্রমণ ক্ষমতা কয়েকগুণ বাড়িয়ে পুনঃপ্রবেশ করেছে মানবদেহে। এই তথ্য প্রকাশ্যে এনে রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের পর্যবেক্ষণ, এই রিভার্স জুনোসিস না ঠেকাতে পারলে অতিমারীর বিনাশ ঘটানো যাবে না। এই নিয়ে গবেষণারত বিজ্ঞানীদের দলে রয়েছেন বহু তারকা অধ্যাপক। আমেরিকার ইমিউনোলজিস্ট ক্রিস্টিয়ান অ্যান্ডারসন, সুইজারল্যান্ডের মলিকিউলার এপিডেমোলজিস্ট এমা হডক্রাফট, ব্রিটেনের অ্যান্ড্রু রামবট, রবার্ট গ্যারি প্রমুখ।

সম্প্রতি বিশ্ববন্দিত নেচার পত্রিকায় প্রকাশিত একটি পেপারেও এই রিভার্স জুনোসিসের অবতারণা করা হয়েছে। অর্থাৎ, একটা বিষয় পরিষ্কার, করোনা মানুষের মধ্যে থেকে বিদায় নিক বা না নিক, মনুষ্যেতর প্রাণীদের মধ্যে থেকে যাবে। এবং তা সময় সুযোগ মতো ‘স্পিল ওভার’ করে মানুষের শরীরে চলে আসবে। যেমন বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি ছিল চিনের উহানে নোভেল করোনা এসেছে বাদুর থেকে মানব দেহে। অর্থাৎ এই যাওয়া আসা চলতেই থাকবে।

ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. সিদ্ধার্থ জোয়ারদার জানিয়েছিলেন, মহামারীর মাঝামাঝি সময়ে জানা গিয়েছিল মানুষ ছাড়াও অন্য স্তন্যপায়ী প্রাণীদের শরীরে সংক্রমণ ঘটাতে পটু এই করোনা ভাইরাস। কুকুর, বিড়াল, বাঘ, সিংহ ছাড়াও ল্যাবরেটরি-প্রাণী ফেরেট, ইঁদুর গোত্রের প্রাণী মিঙ্ককে আক্রমণ করছিল করোনা। তাতেও সাধ মিটল না তার। ভোল পালটে এখন তার শিকার ওয়াইট টেল ডিয়ারের মতো বন্যপ্রাণী ও ইঁদুর। অর্থাৎ ক্রমশ তার সাম্রাজ্য বাড়াচ্ছে এই ভাইরাস। এর সঙ্গে তার প্রথম ধারক বাদুর তো রয়েছেই।