রোগীদের আর ফ্লোরে চিকিৎসা নিতে হবে না : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: কোনো রোগীকে আর ফ্লোরে চিকিৎসাসেবা নিতে হবে না— জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, সরকারি হাসপাতালে গেলে এখনও দেখা যায় জায়গার অভাব। বাধ্য হয়ে হাসপাতালের ফ্লোরে রোগীর চিকিৎসাসেবা দিতে হয়।

মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অডিটোরিয়ামে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৭৪টি ‘শেখ রাসেল স্ক্যানু’ (বিশেষায়িত নবজাতক সেবাকেন্দ্র) উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষের জীবনমান উন্নত হয়েছে। গড় আয়ু অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ চলে গেছে। এ সময়ে ফ্লোরে চিকিৎসাসেবা দেওয়াটা খুবই দুঃখজনক। এটা আর হতে দেওয়া যাবে না।

‘যদি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ভালো চিকিৎসা দিতে পারে, যদি থাইল্যান্ড চিকিৎসাসেবা দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে পারে, তাহলে আমরাও পারব। আমাদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে মানুষকে সন্তুষ্ট করতে পারব। একজন মানুষ অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে আসবে, সেই মানুষ হাসপাতাল থেকে কাঙ্ক্ষিত সেবা লাভ করবে, এটাই স্বাভাবিক। এজন্য কেউ চিকিৎসা নিতে এসে জায়গা না পেয়ে ফ্লোরে চিকিৎসা নেবে, এটা অচিরেই বন্ধ করতে সব রকম কাজ করা হবে। এজন্য এবার আমরা মাঠে নামছি।’

জাহিদ মালেক বলেন, ঢাকার পাশাপাশি দেশের প্রতিটি জেলা শহরের হাসপাতালের সেবাব্যবস্থা মনিটরিংয়ের জন্য মন্ত্রণালয়ে দুটি টিম করা হয়েছে। ঢাকার বাইরে প্রতিটি হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ঢাকার মানের উন্নত হাসপাতাল দেশের আট বিভাগেই করা হচ্ছে। এতে ঢাকার ওপর চাপ কমে যাবে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি এমনভাবে সাজানোর পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে যে, এটি বাস্তবায়ন করার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হবে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে ভালো ও আদর্শ চিকিৎসাকেন্দ্র।

বর্তমানে দেশে বছরে ৯০ হাজার শিশু জন্মকালীন বিভিন্ন সমস্যায় মারা যায়। তাদের ৫২ শতাংশই মারা যায় জন্মের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে, বাড়িতে প্রসবের সময়। এজন্য শিশুর জন্মকালীন প্রতিটি মায়েদের হাসপাতালে নেওয়া উচিত। সরকারি চিকিৎসাসেবা দেওয়া উচিত। শিশুদের জন্য স্ক্যানু সেবা চালুর পর এখন পর্যন্ত দেশের প্রায় এক লাখ শিশুর জীবন রক্ষা পেয়েছে। এ কারণে দেশে শিশুমৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্য হারে কমতে শুরু করেছে— বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

সভা শেষে দেশের ৫০টি জেলায় ৭৪টি শেখ রাসেল স্ক্যান কেন্দ্র উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, বিএমএ সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাচিপ সভাপতি অধ্যাপক ইকবাল আর্সলান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডা. আহমেদুল কবীর প্রমুখ।