কোভিড সামাল দেয়া সম্ভব হলেও নাকাল ডায়রিয়ায়: স্বাস্থ্য মহাপরিচালক

ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সামাল দিতে পারলেও ডায়রিয়া নিয়ে নাকাল হচ্ছি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম।

রোববার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে ২৫ এপ্রিল বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বাস্থ্য মহাপরিচালক বলেন, ডায়রিয়া বা কলেরা যদি আরও বেড়ে যায় সেক্ষেত্রে দুবাই, কাতার, আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নেওয়া স্টপ (বন্ধ) করে দিতে পারে।

খুরশীদ আলম বলেন, ম্যালেরিয়া আমরা সম্পূর্ণ নির্মূল করতে পারছি না। যে বাধাগুলো রয়েছে, সেগুলো দূর করার জন্য নতুন করে পরিকল্পনা করে আমরা এগিয়ে যাব। জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে। যেসব এলাকায় ম্যালেরিয়া বাড়ছে, সেসব এলাকায় কাজ করতে হবে।

২০৩০ সালের মধ্যে ম্যালেরিয়া সম্পূর্ণ নির্মূলের কথা তুলে ধরে অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০২০ সালের তুলনায় দেশে ২০২১ সালে ম্যালেরিয়ার রোগী বেড়েছে। দেশে ২০২১ সালে ম্যালেরিয়া রোগী ছিল ৭ হাজার ২৯৪, মৃত্যু হয় ৯ জনের। তার আগের বছরে রোগী ছিল ৬ হাজার ১৩০, মৃত্যু ছিল ৯টি।

বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ১৩টি জেলার ৭২টি উপজেলায় ম্যালেরিয়ার প্রকোপ রয়েছে। রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, এবং বান্দরবান- এ তিন পার্বত্য জেলায় ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত ও মৃত্যুহার সর্বাধিক। এ তিন জেলাকে উচ্চ ম্যালেরিয়াপ্রবণ অঞ্চল হিসেবে গণ্য করা হয়।

গ্লোবাল ফান্ড টু ফাইট এইডস, টিবি অ্যান্ড ম্যালেরিয়ার আর্থিক সহায়তা বাংলাদেশে ম্যালেরিয়া কার্যক্রমকে আরও সম্প্রসারিত, শক্তিশালী ও গতিশীল করেছে। বাংলাদেশে ম্যালেরিয়া নির্মূলের জন্য জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল কার্যক্রমের সঙ্গে ব্র্যাকসহ চারটি এনজিওর সমন্বয়ে গঠিত একটি কনসোর্টিয়াম যৌথ অংশীদারত্বের মাধ্যমে কাজ করছে।

ম্যালেরিয়াপ্রবণ অঞ্চলে বসবাসরত জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় ম্যালেরিয়া সেবা বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। ২০০৮-২০২১ সালে দেশে ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা ও ম্যালেরিয়ায় মৃত্যুহ্রাসের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে।

২০০৮ সালের তুলনায় ২০২১ সালে ম্যালেরিয়াজনিত অসুস্থতা শতকরা ৯৪ ভাগ, মৃত্যু শতকরা ৯৩ ভাগ কমেছে। মোট ম্যালেরিয়া রোগীর ৯৪ শতাংশই তিন পার্বত্য জেলায়। ময়মনসিংহ ও সিলেট অঞ্চলের আটটি জেলায় ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা মাত্র ১০ শতাংশ। আশা করা যাচ্ছে, এসব জেলায় ম্যালেরিয়া নির্মূলের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।