সৈয়দ আবুল মকসুদ এর মৃত‌্যুতে ভোক্তাকণ্ঠ পরিবার শোকাহত

বাংলাদেশের খ্যাতিমান কলামিস্ট, গবেষক, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক লেখক ও সৈয়দ আবুল মকসুদ এর মৃতুতে ভোক্তাকণ্ঠ পরিবার গভীরভাবে শোকাহত। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা ও তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে ভোক্তাকণ্ঠ পত্রিকাটি। মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় তিনি রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
জনপ্রিয় এই কলামিস্ট তার গবেষণাধর্মী প্রবন্ধের জন্য সুপরিচিত। তিনি ১৯৪৬ সালের ২৩ অক্টোবর মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলার এলাচিপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য ১৯৯৫ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান এই লেখক। এখন পর্যন্ত তার ৪০টির বেশি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে দুটি কাব্যগ্রন্থ, একটি কাব্য সংকলন।
তিনি বিখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনী নিয়ে গবেষণাধর্মী বই লিখেছেন। এরমধ্যে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর জীবন, কর্মকাণ্ড, রাজনীতি ও দর্শন, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর জীবন ও সাহিত্য, ভাসানী কাহিনী, স্মৃতিতে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, গান্ধী মিশন ডায়েরি, পূর্ববঙ্গে রবীন্দ্রনাথ, বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দশ দার্শনিক, পথিকৃৎ নারীবাদী খায়রুন্নেসা খাতুন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী জীবন ও সাহিত্য, হরিশচন্দ্র মিত্র উল্লেখযোগ্য।
তার প্রবন্ধের বইয়ের মধ্যে যুদ্ধ ও মানুষের মূর্খতা, গান্ধী, নেহরু ও নোয়াখালী, ঢাকার বুদ্ধদেব বসু, রবীন্দ্রনাথের ধর্মতত্ত্ব ও দর্শন, প্রভৃতি, প্রতীচ্য প্রতিভা, কাজী ইমদাদুল হক রচনাবলি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা, অরণ্য বেতার, বাঙালি জাতি বাঙালি মুসলমান ও বাঙালি জাতীয়তাবাদ, রাজনীতি ও ধর্মীয় রাজনীতি, রবীন্দ্র রাজনীতি উল্লেখযোগ্য।
পত্রিকায় ‘সহজিয়া কড়চা’ এবং ‘বাঘা তেঁতুল’ শিরোনামে কলাম লিখে পরিচিত পান সৈয়দ আবুল মকসুদ। তিনি ১৯৬৪ সালে এম আনিসুজ্জামান সম্পাদিত সাপ্তাহিক নবযুগ পত্রিকায় কর্মজীবন শুরু করেন। পরে কিছুদিন সাপ্তাহিক জনতা’য় কাজ করেন তিনি। ১৯৭১ সালে যোগ দেন বাংলাদেশ বার্তা সংস্থায়। দীর্ঘদিন সেখানে সাংবাদিকতা শেষে চাকরি ছেড়ে দেন বাসস থেকে। এরপর সার্বক্ষণিক লেখালেখিতে মনোনিবেশ করেন তিনি। সর্বশেষ ভোক্তাদের অধিকার রক্ষায় কাজ করেন কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক‌্যাব)-এ। মৃত‌্যুর আগ পর্যন্ত ক‌্যাবের বিদ‌্যুৎ ও জ্বালানি অভিযোগ অনুসন্ধান ও গবেষণা কমিশন এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এছাড়া ভোক্তাকণ্ঠের উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি ছিলেন।
সৈয়দ আবুল মকসুদ স্ত্রী এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।

মৃত্যুজনিত কারণে তাঁর পদটি (সম্পাদকমন্ডলির সভাপতি) শুন্য ঘোষণা করা হলো।