আমদানির খবরে কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: বাংলাদেশসহ আরও পাঁচ দেশে সরকারি ভাবে সীমিত আকারে পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে ভারত। এমন খবরের পর দিনই দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। সোমবার যে পেঁয়াজ খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, একদিনের ব্যবধানে সেই পেঁয়াজের দাম ১০ টাকা কমে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মঙ্গলবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারের খুচরা দোকানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা দরে। তবে সোমবার ওইসব খুচরা দোকানেই একই পেঁয়াজ ১২০ টাকায় বিক্রি করেছেন তারা।

বিক্রেতারা বলছেন, প্রায় ১০ দিন হলো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। মুড়িকাটা পেঁয়াজ একেবারে শেষ দিকে হওয়ায় বাজারে সরবরাহ কম, সে কারণেই বাড়তি দাম যাচ্ছিল পেঁয়াজের। প্রধান জাতের পেঁয়াজ অর্থাৎ হালিকাটা পেঁয়াজ বাজারে পর্যাপ্ত এলেই দাম কমে যেত। এরমধ্যে ভারত থেকে পেঁয়াজ আসার খবরে এখনই দাম কমতে শুরু করেছে।

রাজধানীর মালিবাগ এলাকার এক পেঁয়াজ বিক্রেতা রবিউল ইসলাম বলেন, সোমবার পাইকারি বাজার থেকে ১১০ টাকা দরে পেঁয়াজ কিনে এনে খুচরা ১২০ টাকা বিক্রি করছিলাম। কিন্তু মঙ্গলবার বাজার একটু কমেছে তাই সব দোকানি ১১০ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। সে কারণে আমিও ১০ টাকা কমিয়ে এখন ১১০ টাকায় বিক্রি করছি। বাজার যখন যেমন হবে আমাদের সেভাবেই তো বিক্রি করতে হবে।

পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজ একেবারেই শেষের দিকে। কৃষকদের কাছে আর মুড়িকাটা পেঁয়াজ নেই। সে কারণে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গেছে। পেঁয়াজের দাম বাড়তি যাচ্ছিল। এখন প্রধান পেঁয়াজ অর্থাৎ হালিকাটা পেঁয়াজ উঠতে শুরু করবে তাই এমনিতেই পেঁয়াজের দাম কমে যাবে। এছাড়া ভারত থেকে পেঁয়াজা আমদানি বন্ধ ছিল, এখন আবার ভারত আমাদের দেশে পেঁয়াজ রপ্তানি করবে। তাই বাজারে পেঁয়াজের দাম কমে যাবে।

রাজধানীর রামপুরা বাজার করতে আসা সজিবুর রহমান নামের এক ক্রেতা বলেন, সোমবার বাজারে দেখেছি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিলো ১২০ টাকায় আজ আবার দেখছি ১০ টাকা দাম কমে গেছে। সোমবার খবরে দেখলাম ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি করবে বাংলাদেশে যা এতদিন বন্ধ ছিল। অসাধু ব্যবসায়ীরা মনে হয় সে খবর জানতে পেরেই বাধ্য হয়ে দাম কমাতে শুরু করেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসেব মতে, চলতি বছর দুই লাখ ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে ৩৬ লাখ ৭৩ হাজার টন পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে চারা পেঁয়াজ ২৭ লাখ ২৮ হাজার টন, কন্দ পেঁয়াজ আট লাখ ১৯ হাজার ও পেঁয়াজ বীজ ৫৬ হাজার টন। দেশে পেঁয়াজের চাহিদা প্রায় ৩০ লাখ টন। সর্বশেষ অর্থবছরে ৩৪ লাখ টনের বেশি উৎপাদন হয়। তবে মাঠ পর্যায় থেকে ভোক্তা পর্যন্ত যেতে এক-চতুর্থাংশ পেঁয়াজ নষ্ট হয় কিংবা শুকিয়ে কমে যায়। গত বছরের মার্চে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।

ট্রেডিং কর্পোরেশনের অব বাংলাদেশের (টিসিবি) সহকারী পরিচালক (বাজার তথ্য) নাসির উদ্দিন তালুকদার জানিয়েছেন, সোমবার বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ১২০ টাকা। গত মাসে এই পেঁয়াজের দাম ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা। আর গত বছর ঠিক এই সময় বাজারে পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে।