করোনায় খাদ্য সংকটে বিশ্ব, প্রস্তুতি রয়েছে বাংলাদেশে

বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারিতে দেখা দিচ্ছে খাদ্য ঘাটতির শঙ্কা। এ অবস্থায় খাদ্যশস্য উৎপাদন বাড়াতে এবারও কৃষকদের স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়াসহ নানা পরিকল্পনার নেওয়ার কথা জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী। 

খাদ্য সচিব বলছেন, মজুত স্বাভাবিক রাখতে মিলারদের প্রণোদনার পাশাপাশি চাল ও গম আমদানির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বাজারে চালের দাম বেশি থাকায় এবারও ধান-চাল সংগ্রহ ব্যর্থ হওয়ার শঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। শুল্ক ছাড় দিয়ে চাল আমদানি করে অন্তত ১৫ থেকে ১৮ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুতের তাগিদ তাদের।

স্বাধীনতার পর পাঁচ দশকে দেশে খাদ্যশস্যের উৎপাদন বেড়েছে তিন গুণেরও বেশি। এমনকি চাল উৎপাদনে সারাবিশ্বের মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ। তবে বিশ্বব্যাপী করোনা পরিস্থিতিতে ইএসডিএর গ্রেইন অ্যান্ড ফিড আপডেট প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি অর্থবছরে গতবারের চেয়ে ১০ লাখ টন কমে চালের উৎপাদন হবে ৩ কোটি ৪৮ লাখ টন। অপরদিকে, ৭৫ লাখ টন গমের চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন হবে মাত্র ১২ লাখ টন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দেশে খাদ্যশস্য সংগ্রহের পাশাপাশি শুল্ক ছাড় দিয়ে আমদানির মাধ্যমে পর্যাপ্ত মজুত করতে হবে।

পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, খাদ্য সংকটের এমন শঙ্কায় সরকারকে আগাম খাদ্য মজুত করতে হবে। কৃষক সরকারের কাছে বিক্রি করতে গেলে সেখানে মধ্যস্বত্বভোগী চলে আসে। সেটা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ ছাড়া চাল আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক ছাড় দিয়ে ভারত থেকে চাল এনে মজুত করতে হবে।আর খাদ্যশস্য উৎপাদন বাড়ানোকে গুরুত্ব দিয়ে নানা পরিকল্পনা নেয়ার কথা জানান কৃষিমন্ত্রী।

কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, মহামারি আমাদের একটা অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলেছে। সেটাকে মাথায় রেখে আমরা নানা পরিকল্পনা নিয়েছি। গতবছর আমরা ৫ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দিয়েছি। ৪ শতাংশে মৎস্য ও পশু সম্পদসহ কৃষিতে এই প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এরপর আমরা ১৪-১৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হতো ৮ থেকে ৯ শতাংশ সুদে, সেটা কমিয়ে ৪ শতাংশে আনা হয়েছে।

বর্তমানে আমাদের ৪৩ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ। এতে করে বাইরের দেশ থেকে খাদ্য আমদানিতে আমাদের তেমন কোনো সমস্যা হবে না।এদিকে গতবছর ধান চাল সংগ্রহ ব্যর্থ হওয়ায় এবার চাল ও গম সংগ্রহ বাড়াতে মিলারদের প্রণোদনার পাশাপাশি, আমদানির প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানান খাদ্য সচিব।খাদ্য সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম বলেন, বন্যা বা ঘূর্ণিঝড় বড় কোনো বিপর্যয় না হলে আমাদের তেমন কোনো সমস্যা হয় না। ৫ থেকে ৬ লাখ মেট্রিক টন গম আমরা বিদেশ থেকে আমদানি করে থাকি। আমাদের সেই পরিকল্পনা হয়ে গেছে। জুন-জুলাই এই সময়ে আমরা টেন্ডার করে ফেলি গম সংগ্রহের জন্য। যারা আমাদের আগে চাল দেবে, তাদের আমরা প্রণোদনা হিসেবে অতিরিক্ত বরাদ্দ দেব।

 সরকারিভাবে চাল আমদানির ক্ষেত্রে ভারতকে বিবেচনায় রাখার কথাও জানান তিনি।