সিএনজিচালিত বাসেও নেওয়া হচ্ছে নতুন ভাড়া

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোয় পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের আন্দোলনের (ধর্মঘট) মুখে বাসের ভাড়া বাড়িয়েছে সরকার। নতুন করে নির্ধারিত ভাড়ায় চলছে গণপরিবহন। অথচ যেসব বাস সিএনজিচালিত, সেগুলোও সরকার নির্ধারিত তেলের দামে বাড়তি ভাড়া নিচ্ছে।

সোমবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর বেশ কয়েকটি পয়েন্টে ঘুরে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। তবে বাসচালক ও হেলপার তাদের গাড়ি সিএনজিচালিত বিষয়ে অস্বীকার করেছেন। চালকদের সঙ্গে কথা বললে কেউই বিষয়টি স্বীকার করতে চাননি। জানতে চাইলে সবাই দাবি করেন, তাদের তেলের গাড়ি। কিন্তু গাড়ির পেছনের অংশে নিচে সিএনজি সিলিন্ডার (বোতল) দেখা যায়।

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে গাবতলী এবং টঙ্গীসহ বিভিন্ন রুটে চলা বেশ কয়েকটি বাসে এমন চিত্র দেখা যায়। এসব রুটে লোকাল বাস হিসেবে পরিচিত ৮ নম্বর, অনাবিল, তুরাগসহ বেশ কয়েকটি ওয়েবিলে নিয়ন্ত্রিত বাস।

যাত্রাবাড়ী থেকে টঙ্গী রুটে চলাচলকারী তুরাগ পরিবহনের বেশ কয়েকটি বাস সিএনজিচালিত হলেও যাত্রীদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত নতুন ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া যাত্রাবাড়ী-গাবতলী রুটে ৮ নম্বর, উত্তরা রুটে রাইদাসহ কয়েকটি সিএনজিচালিত বাস চলছে। তবে চালকদের সঙ্গে কথা বললে কেউ বিষয়টি স্বীকার করতে চাননি। কিন্তু গাড়ির পেছনের অংশে নিচে সিএনজির বোতল দেখা যায়।

একাধিক চালক-হেলপারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যাত্রাবাড়ী থেকে টঙ্গী পর্যন্ত আগের ভাড়া ছিল ৪৫ টাকা। সে ভাড়া এখন ৬০ টাকা রাখা হচ্ছে। কোনো কোনো গাড়ির চালক-হেলপার দাবি করেন ৫৫ টাকা রাখছেন তারা। কম-বেশি কেন প্রশ্ন করলে এক চালক বলেন, ‘ভাই, কম-বেশি দু-চার টাকা এদিক-সেদিক করে রাখি আরকি’।

ওয়েবিলে নিয়ন্ত্রিত রাইদা পরিবহন চলাচল করে যাত্রাবাড়ী থেকে উত্তরা পর্যন্ত। রাইদার বিষয়ে তুরাগ পরিবহনের এক চালক অভিযোগ করে বলেন, ‘রাইদা তো ৭০ টাকা রাখবে। সে পরিমাণে আমরা তো কমই রাখতাছি।’

সিএনজিচালিত হয়েও কেন বাড়তি ভাড়া রাখছেন প্রশ্নে ওই চালক বলেন, ‘ভাড়া বাড়ছে মানে সব গাড়িতেই বাড়ছে। কোন গাড়ি সিএনজি আর কোন গাড়ি তেলের রাস্তায় নামলে তার কী আর হিসাব থাকে। শুধু কী তেলের খরচ নাকি। গাড়িতে আরও অনেক খরচ আছে ভাই।’

তুরাগ পরিবহনের আরেক চালক বলেন, ‘রাস্তায় সিএনজিচালিত বাসের সংখ্যা খুবই কম। ১০০ টার মধ্যে হয়তো ১৫টা হবে সর্বোচ্চ। বাড়লে তো সব বাসই বেশি ভাড়া নেবে। মালিক যদি বেশি টাকা নেন, আমাদের কী করার আছে। আমরা তো গাড়ি চালাই। সিদ্ধান্ত মালিকের।’

গ্যাসের গাড়ি কয়টা আছে জানতে চাইলে আরেকজন চালক বলেন, ‘১০০টা গাড়ি চেক করলে ৩০টা গ্যাসের গাড়ি বের হবে’।

তবে রাস্তায় এখন সিএনজিচালিত বাস নেই দাবি করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘ঢাকা শহরে এখন আর সিএনজিচালিত বাস নেই। যদি থাকে, সর্বোচ্চ ১ থেকে ২ শতাংশ হবে। আমাদের পক্ষ থেকে তাদের নির্দেশনা দেওয়া আছে। তারা আগের ভাড়াই রাখবে। যদি বেশি রাখে, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) আদালত ব্যবস্থা নেবেন।’