অন্ধ যাত্রীকে ফিরিয়ে দেয়ায় জরিমানা ক্যাবের

সান ফ্রান্সিসকোতে লিসা আর্ভিং নামে এক মহিলাকে গাড়িতে তুলতে অস্বীকার করেন ক্যাব চালকেরা। ‘ক্যান্সেল’ করে দেওয়া হয় তাঁর ‘রাইড’। ঘটনাটি এক বারের নয়, বার ১৪ একই পরিস্থিতির সম্মুখিন হতে হয় লিসাকে। এ বার যার মাশুল হিসেবে ওই অ্যাপ ক্যাব সংস্থাটিকে বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সান ফ্রান্সিসকোর এক বিচারক। বাংলাদেশী টাকায় যে অঙ্কটি প্রায় ১৩ লক্ষ টাকা।

২০১৮ সালে অ্যাপ ক্যাব সংস্থাটির বিরুদ্ধে আইনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সান ফ্রান্সিসকো বে অঞ্চলের বাসিন্দা লিসা। সম্পূর্ণ ভাবে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন তিনি। চলাফেরা করতে বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষিত কুকুর বার্নির উপরেই পুরোপুরি নির্ভরশীল। আর এই পরিস্থিতিরই সুযোগ নেন একাধিক ক্যাব চালক। লিসার অভিযোগ, কখনও বার্নিকে গাড়িতে তুলতে আপত্তি জানায় চালকেরা। কখনও আবার তাঁকে তুলতেই সাফ মানা করে দেন। এমনকি একাধিকবার গালাগালিও শুনতে হয়েছে তাঁকে।

এই পরিস্থিতির জেরে অনেক বারই কাজের জায়গায় পৌঁছতে দেরি হয়েছে তাঁর। এর জেরেই কাজটিও হারাতে হয়েছে তাঁকে, দাবি লিসার। রাতের অন্ধকারে মাঝরাস্তায় একা দাঁড়িয়ে থাকার অভিজ্ঞতাও হয়েছে। ক্যাব কর্তৃপক্ষের কাছে সরাসরি অভিযোগ জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। লিসার আইনজীবী ক্যাথারিন কাবালোর কথায়, ‘‘আমেরিকানস উইদ ডিসএবিলিটি আইন অনুযায়ী, দৃষ্টিশক্তিহীন মানুষের সঙ্গে ছায়ার মতো সব জায়গায় যেতে পারে সঙ্গে থাকা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পোষ্যটি। ফলে তা নিয়ে সমস্যা তৈরির কোনও জায়গাই নেই।’’

সংস্থাটি অবশ্য এক বিবৃতিতে জানায়, ‘‘উবারের প্রযুক্তি ব্যবহারে দৃষ্টিহীনদের রাইড খুঁজে পাওয়া এবং তা বুক করা সহজ তার জন্য আমরা গর্বিত। চালকেরা যাতে এই যাত্রীদের ফিরিয়ে না-দেন তার জন্য আমরা প্রতিনিয়ত তাঁদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। তা সত্ত্বেও যদি এ ধরনের অভিযোগ ওঠে, তা হলে তা খতিয়ে দেখার বিশেষ দল রয়েছে আমাদের।’’

তবে বিচারক জানান, এ বিষয়ে অন্তত সংস্থার দাবি গ্রহণযোগ্য নয়। খতিয়ে দেখা গিয়েছে যে ওই ‘বিশেষ দলের’ সদস্যদের এমন ভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় যে যাত্রীরা এ ধরনের অভিযোগ তুললে চালকেরা যাতে কোনও সহজ অজুহাত দেখিয়ে বেরিয়ে আসতে পারেন সে ভাবেই উপদেশ দেওয়ার জন্য তৎপর থাকেন তাঁরা। অভিযুক্ত চালকদের সহজে সরিয়ে দিতেও আপত্তি তাঁদের।

চালকেরা তাদের সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে কাজ করেন, সংস্থার কর্মী নন তাঁরা— উবরের তরফে অবশ্য আর্জি জানিয়ে ক্ষতিপূরণ এড়ানোর এই শেষ চেষ্টা চালানো হয়। যদিও সেই আবেদন এক বাক্যে খারিজ করে দিয়েছেন বিচারক।