ওমিক্রন প্রতিরোধে কার্যকর ফাইজারের বুস্টার ডোজ

ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক:  দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত করোনাভাইরাসের অতিসংক্রামক ধরন ওমিক্রন প্রতিরোধে ফাইজার টিকার বুস্টার ডোজ কার্যকর বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলি গবেষকরা। তারা বলছেন, ভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট মোকাবিলায় ফাইজার-বায়োএনটেকের তিনটি টিকা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সুরক্ষা নিশ্চিত করে।

ইসরায়েলি গবেষকদের করা নতুন একটি গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে বলে শনিবার (১১ ডিসেম্বর) জানিয়েছেন তারা। রোববার (১২ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এর আগে গত সপ্তাহে একই ধরনের তথ্য সামনে আনে করোনা টিকা ও ওষুধপ্রস্তুতকারী মার্কিন প্রতিষ্ঠান ফাইজার। সেসময় সংস্থাটি জানায়, এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট মোকাবিলায় তাদের বুস্টার ডোজ কার্যকর।

ফাইজার-বায়োএনটেকের পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কোভিড-১৯ ঠেকাতে আমাদের টিকা কার্যকর। এছাড়া যদি টিকার তৃতীয় ডোজ সবার জন্য প্রযোজ্য করা হয়, সেক্ষেত্রে এটি ওমিক্রনের বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় সুরক্ষা দিতে পারবে।’

রয়টার্স বলছে, ওমিক্রনের বিরুদ্ধে ফাইজারের করোনা টিকার কার্যকারিতা নিয়ে যৌথভাবে গবেষণা করে ইসরায়েলি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সেন্ট্রাল ভাইরোলজি ল্যাবরেটরি এবং শেবা মেডিকেল সেন্টার। গবেষণায় ২০ জন করে দু’টি গ্রুপ গঠন করা হয়।

যাদের একটি গ্রুপ পাঁচ থেকে ছয় মাস আগে করোনা টিকা দু’টি ডোজ নিয়েছেন, তবে এখনও বুস্টার ডোজ নেননি। অন্যদিকে অন্য গ্রুপটি টিকার দু’টি ডোজ নেওয়ার পাশাপাশি এক মাস আগে বুস্টার ডোজও নিয়েছেন।

শেবা মেডিকেল সেন্টারের সংক্রামক রোগতত্ত্ব বিভাগের পরিচালক গিলি রেজেভ-ইয়োচে সাংবাদিকদের জানান, ‘যেসব ব্যক্তি ৫ থেকে ৬ মাস আগে করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন, তাদের শরীরে ওমিক্রন প্রতিরোধে এখন আর কোনো সক্ষমতা নেই। তবে করোনার ডেল্টা ধরনের বিরুদ্ধে তাদের শরীরে এখনও কিছু রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা অবশিষ্ট রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভালো খবর হচ্ছে, বুস্টার ডোজ গ্রহীতাদের শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা প্রায় একশো গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থাৎ ওমিক্রনের বিরুদ্ধে টিকার বুস্টার ডোজ উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সুরক্ষা দেয়।’

এর আগে গত সপ্তাহে ফাইজার-বায়োএনটেকের বিবৃতিতে জানানো হয়, ফাইজার টিকার দুই ডোজ নেওয়ার পর মূল করোনাভাইরাস ও তার অন্যান্য রূপান্তরিত ধরনগুলোর বিরুদ্ধে মানবদেহে যে পরিমাণ প্রতিরোধী অ্যান্টিবডির তৈরি হয়, ওমিক্রনের বিরুদ্ধে সেই একই পরিমাণ অ্যান্টিবডি তৈরি হবে এই টিকার তৃতীয় ডোজ নেওয়া হলে।

গত ২৪ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথমবারের মতো ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপরই তা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। একজন বিশেষজ্ঞ করোনার বি.১.১.৫২৯ নামক এই ভ্যারিয়েন্টকে ‘এ যাবতকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন।

এমনকি করোনার এই ধরন মানবদেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকেও আক্রমণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গ্রিক বর্ণমালার ১৫ নম্বর অক্ষর অনুযায়ী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ভ্যারিয়েন্টকে ‘ওমিক্রন’ নাম দেয়।