‘আমরা আইটি পণ্য ও সেবায় রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হতে চাই’

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, ‘আমাদের তরুণরা চাকরির পেছনে ছুটবে না বরং চাকরি দেবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আইটি সেক্টরে শুধুমাত্র আমদানিকারক না থেকে উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে আমরা নিজেদের প্রস্তুত করেছি। এখন আমরা আইটি পণ্য ও সেবায় রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হতে চাই।’

মঙ্গলবার রাতে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাজেট ২০২২-২৩: তারুণ্যের দক্ষতা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে আইসিটি সেক্টরের ভূমিকা ও সরকারের পরিকল্পনা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যে জনগণের সরকার তা এবারের বাজেটের দিকে তাকালেই বোঝা যায়। আইসিটি সেক্টর নিয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটি অনেকগুলো বাজেটপূর্ব সুপারিশ করেছিল যেগুলো এবার বিশেষ ভাবে বিবেচনা করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দেশে ১৫টি মোবাইল ফোন কোম্পানি তাদের পণ্য উৎপাদন করছে। আশা করছি খুব শিগগিরই ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ মোবাইল ফোন রপ্তানি করবো। আমাদের নিজস্ব পণ্য উৎপাদন করা এবং বিদেশি পণ্যের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর জন্য এবারের বাজেটে যুগান্তকারী কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এবারের বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং বিচার বিভাগের ডিজিটালাইজেশনের জন্য দুই হাজার ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা এবং ২৫ হাজার নারীকে আগামী এক বছরের মধ্যে আইটি সেক্টরে দক্ষ করে গড়ে তোলা হবে বলে জানান তিনি।’

স্বাগত বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর।

আলোচক ছিলেন বুয়েটের কম্পিউটারকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম, ওয়ালটন ডিজিটেক ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী লিয়াকত আলী এবং ফ্রিল্যান্স সফটওয়্যার ডেভেলপার রাসেল আহমেদ।

আওয়ামী লীগের উপকমিটির সদস্য সুফি ফারুক ইবনে আবু বকরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হোসেন মনসুর।

স্বাগত বক্তব্যে ইঞ্জিনয়ার মো. আবদুস সবুর বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ তরুণ। প্রায় ৫ কোটি ৩০ লাখ তরুণ অর্থনীতিতে সক্রিয় অবদান রাখছে। গত ১৩ বছরে ২০ লাখ কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে আইসিটি সেক্টরে। দেশের সাড়ে ৬ লাখ ফ্রিল্যান্সার বিশ্ববাজারে দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে কাজ করছে। দেশের শিক্ষিত তরুণ জনগোষ্ঠীকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত করা গেলে আমরা ২০৩০ সালে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ও ২০৪১ সালের রূপকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিশ্বের বুকে উন্নত দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবো।

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম বলেন, গ্রাম ও শহরে এক রেটে ইন্টারনেট সেবা দিতে হবে এবং ইন্টারনেটের কোয়ালিটি অব সার্ভিস নিশ্চিত করতে হবে। দেশের শহরগুলোকে স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এজন্য প্রথমেই একটি পাইলট প্রজেক্ট হাতে নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আইসিটিতে উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করতে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব বিষয়ক টেকনোলজি, সফটওয়্যার এবং হার্ডওয়্যার ভ্যাট-ট্যাক্সের আওতামুক্ত রাখা প্রয়োজন। এ সময় তিনি আইসিটি ক্যাডার সার্ভিস বাস্তবায়ন করার দাবি তোলেন।