বাজেটে প্রযুক্তিপণ্যের উপর প্রস্তাবিত ভ্যাট ও কর প্রত্যাহারের দাবি

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: আসন্ন ২০২২-২৩ জাতীয় বাজেটে ল্যাপটপ, প্রিন্টার ও ইন্টারনেটের উপর প্রস্তাবিত ভ্যাট ও কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি পণ্যের ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর নেতারা।

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ২০২২-২৩ জাতীয় বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানান।

তারা বলছেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেট পাস হলে ল্যাপটপের মূল্য ৩১ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং প্রিন্টার, টোনার ও কার্টিজে ১৫ শতাংশ ও ইন্টারনেটের মূল্য ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে; যা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অন্তরায়।’

ব্যবসায়ীদের সংগঠনগুলো একজোট হয়ে ডাকা সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রযুক্তিপণ্যের উপর অতিরিক্ত শুল্ক প্রত্যাহার করে ২০৩০ পর্যন্ত কর অব্যাহতি সুবিধা দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।

তথ্যপ্রযুক্তি পণ্যের ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো হলো- বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব), ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কন্টাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো)।

‘ল্যাপটপ বিলাসী পণ্য নয়; বরং এটা প্রয়োজনীয়’ মন্তব্য করে বিসিএস এর সভাপতি ইঞ্জি. সুব্রত সরকার বলেন, ‘বাংলাদেশে ল্যাপটপ উৎপাদনের প্রযুক্তি কারখানা এখনও স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। মাত্র দুয়েকটি প্রতিষ্ঠান স্বল্প পরিসরে উৎপাদন শুরু করলেও চাহিদার তুলনায় তা অপ্রতুল। আর তারা কেবল বাইরে থেকে আনা কম্পোনেন্টস এখানে সংযোজন করছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় উৎপাদনকে উৎসাহ দিতে আমদানিতে বাড়তি ট্যাক্স বসালে তা আসলে স্থানীয় উৎপাদনের সহায়তার চাইতে ব্যবহারকারীদের জন্য বাড়তি চাপ হয়ে দাঁড়াবে।’

ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার বলেন, ‘উদ্দ্যোক্তাদের সেবা প্রদানের জন্য ল্যাপটপ, কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের মূল্য বৃদ্ধি করা হলে তাদের ব্যয় বেড়ে যাবে। বর্তমানে দেশে ই-কমার্স খাত সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এই সময়ে যদি ল্যাপটপ, কম্পিউটারের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট এবং ইন্টারনেটের ওপর ১০ শতাংশ কর আরোপ করা হয় তবে উদ্যোক্তারা তাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন না।’

বাক্কোর সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ বলেন, ‘ল্যাপটপ ও প্রিন্টারের উপর প্রস্তাবিত কর ও শুল্ক বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং (বিপিও) খাতকেও প্রভাবিত করবে। ভ্যাট আরোপ হওয়ার ফলে খরচ বৃদ্ধি পাবে। এতে অনেক প্রতিষ্ঠান আউটসোর্সিংয়ের কাজ করতে চাইবে না। পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সারদের জন্যও ল্যাপটপ কেনা কঠিন হয়ে যাবে।’

বেসিস সহ-সভাপতি আবু দাউদ খান বলেন, ‘স্থানীয় প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদন ক্ষমতা, চাহিদা পূরণে সক্ষম না হওয়া পর্যন্ত ল্যাপটপ আমদানিতে অতিরিক্ত শুল্ক সাধারণ ব্যবহারকারীদের ল্যাপটপ চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিসিএস-এর সহ-সভাপতি মো. রাশেদ আলী ভূঁইয়া, মহাসচিব কামরুজ্জামান ভূঁইয়া, পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম এবং মুহাম্মদ মনিরুল ইসলামসহ অন্যান্য সংগঠনের নেতারা।