চট্টগ্রামে গ্যাস সংকট দূর করতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি ক্যাবের

ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: চট্টগ্রাম নগরে এখন গ্যাসের হাহাকার চলছে। ঘরের চুলা থেকে শুরু করে সিএনজি ফিলিং স্টেশন, শিল্প কারখানা কোথাও গ্যাস নেই। অনেকে বাধ্য হয়ে হোটেল-রেস্তোরাঁ থেকে খাবার কিনে খেলেও সবার পক্ষে সেটি সম্ভব হচ্ছে না। ফিলিং স্টেশনগুলোতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে গ্যাস-সংকট থাকলেও সমস্যাটি দেখার যেন কেউ নেই।

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে তীব্র গ্যাস সংকট দূর করতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা জানান কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর নেতৃবৃন্দ।

বিবৃতিতে ক্যাব জানায়, সংকটের কারণে নগরীর আন্দরকিল্লা, জামালখান, লাভলেইন, নন্দনকানন, আগ্রাবাদ, চকবাজার, বহদ্দারহাট, চকবাজার, দেওয়ান বাজারজুড়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কোথাও চুলা জ্বলছে না। গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত মাত্র ৩-৪ ঘণ্টা গ্যাস থাকছে। তবে সূর্য ওঠার আগেই তা চলে যাচ্ছে। কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (কেজিডিসিএল) বেশ কয়েকবার চট্টগ্রামে বিরাজমান গ্যাস সংকট নিরসনের আশ্বাস দিলেও এর দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি।

পেট্রোবাংলার তথ্য অনুযায়ী, দেশে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা ৪১০ কোটি ঘনফুট। যদিও স্বাভাবিক সময়ে সরবরাহ থাকে প্রায় ৩০০ কোটি ঘনফুট। এর মধ্যে দুটি এলএনজি টার্মিনাল থেকে দিনে গ্যাস সরবরাহ হয় ৮৫ কোটি ঘনফুট। এ দুই টার্মিনালের একটি বন্ধ রয়েছে। ফলে সারাদেশে দৈনিক গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে ২৫৫ কোটি ঘনফুট। সব মিলিয়ে দেশে এখন গ্যাসের সরবরাহ হচ্ছে মোট চাহিদার ৬২ শতাংশ।

চট্টগ্রামে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা গড়ে ৪০-৪৫ কোটি ঘনফুট। এর বিপরীতে সরবরাহ হয় ২৮ কোটি ঘনফুট। এর মধ্যে ১০ কোটি ঘনফুটের বেশি ব্যবহার হয় চট্টগ্রামের দুটি সার কারখানা ও একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে। বাকি গ্যাস পায় শিল্প ও আবাসিক খাত। এ সংকটের মধ্যেই সম্প্রতি চট্টগ্রাম থেকে দুই-তিন কোটি ঘনফুট গ্যাসের সরবরাহ নারায়ণগঞ্জের মেঘনা ঘাটে গ্যাস চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রে সরবরাহের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাইপলাইনে গ্যাসের চাপ না থাকায় এমন বিপত্তি তৈরি হয়েছে। জাতীয় অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র চট্টগ্রাম যেকোনো বিবেচনায় গ্যাস সরবরাহে অগ্রাধিকার পাওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তা হচ্ছে না। সংকটের কারণে বেড়ে গেছে গ্যাস সিলিন্ডারের দামও। চট্টগ্রামে ইতিপূর্বে বেশ কয়েকবার এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে, যা কোনো ভাবেই কাম্য নয়।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, সহ-সভাপতি এম নাসিরুল হক, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান প্রমুখ।