ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন কার্ডধারীরা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের সমাজসেবা অফিসের কার্ডধারী প্রতিবন্ধী, বয়স্ক, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তসহ সহশ্রাধিক মানুষ ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

অর্থের অভাবে চিকিৎসা ও খাদ্যসংকটে ভুগছেন এসব মানুষ।আদিতমারী সমাজসেবা অফিসের গাফিলতি আর অনিয়মের কারণে দীর্ঘ সময় ধরে ভাতার টাকা পাচ্ছেননা বলে জানান ভুক্তভোগীরা।

সরকার প্রদত্ত ভাতার টাকা কার্ডধারীদের বিকাশ নম্বরে প্রেরণ না করে অন্য বিকাশ নম্বরে পাঠিয়ে দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

সমাজসেবা কর্মকর্তা দ্বায় স্বীকার করে জানান, এবারের টাকা ভাতাভোগীরা না পেলেও আগামী অর্থবছরে সঠিকভাবে দেয়া হবে।

সরেজমিনে গেলে দেখা যায় ,লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের শারিরীক প্রতিবন্ধী নিখিল চন্দ্র,সত্তরোর্ধ বৃদ্ধ ছকমল হোসেন,ভিখারিনী হেনা বেগম সমাজসেবা অফিসের নিয়মিত কার্ডধারী ভাতাভোগী।

তারা দীর্ঘ দিন থেকে সরকারী ভাতায় তাদের চিকিৎসা ও জীবন জীবিকা নির্বাহ করছে। কিন্তু ২০২০ সালের অক্টোবর মাস থেকে ভাতা পাচ্ছেনা। তাদের মতো অবস্থা এ উপজেলাটির আরো সহশ্রাধিক মানুষের।

পূর্বে নিয়মিত ভাতা পেতেন সরলখাঁ গ্রামের মৃত আকবর আলীর ছেলে ছকমল হোসেন জানান, আগে সোনালী ব্যাংক থেকে নিয়মিত ভাতার টাকা তুলতে পারতেন, কিন্তু বিকাশের মাধ্যমে টাকা প্রাপ্তি সেবা চালু হলে ভাতা বইয়ে তাদের দেয়া বিকাশ নম্বরে টাকা ঢুকছেনা।

সরকারের দেয়া টাকা চলে যাচ্ছে অন্য কারো বিকাশ নম্বরে।আবার কারো বিকাশ নম্বর সঠিক থাকলেও তারা পাওয়ার কথা সাড়ে ৪ হাজার কিন্তু টাকা পেয়েছে ১হাজার ১০টাকা। কেউ বছরে ৯ হাজার টাকা পাওয়ার কথা অথচ বিকাশে পেয়েছে ৭৫৫টাকা। আর এভাবে ৫০লক্ষাধিক টাকা লোপাট হয়েছে।

সারপুকুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আবু সায়েদ আলী জানান, আদিতমারী উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের লোকজন ভাতা না পাওয়ার জন্য দায়ী।তারা ভাতা বইয়ে বিকাশ নম্বও পরিবর্তন করেছে।

আবার কারো কারো বিকাশ নম্বর ঠিক থাকলেও ৯হাজার টাকার পরিবর্তে ৭শত৫৫ টাকা,কারো ৪হাজার ৫শটাকার স্থলে ১হাজার ১০ টাকা দিয়েছে।

বাকীটাকার জন্য ভাতাভোগীরা অফিসে গেলে তাদেরকে বলে টাকা যে কোন সময় বিকাশে ঢুকবে।

সারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম প্রধান বলেন, আমরা বিকাশ নম্বরসহ যে তালিকা দিয়েছি সমাজসেবা অফিস তা নেয়নি। তাদের মনগড়া নম্বর বসিয়েছে। এর ফলে টাকা অন্য নম্বরে গেছে।

বঞ্চিত এসব ভাতাভোগী মানুষ তাদের ভাতার অর্থ পাওয়ার জন্য উপজেলা সমাজসেবা অফিসে প্রতিনিয়তই যোগাযোগ করলেও তাদের কথায় কোনো কর্ণপাত করছেননা অফিসের কর্তারা।

আদিতমারী উপজেলা সমাজসেবা অফিসার রওশন আলী মন্ডল জানান, সময় স্বল্পতার কারণে ভাতাভোগীদের বিকাশ নম্বর যাচাই করা সম্ভব হয়নি। ১৪শ ব্যক্তির ক্ষেত্রে এ সমস্যা হয়েছে। আমরা সমাধানের চেষ্ঠা করছি।